পল্লিশ্রীর এখানেই তৈরি হবে অক্সিজেন প্লান্ট। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে বেগ পেতে হয়েছে হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের আগে বৃহস্পতিবার থেকে অক্সিজেন বটলিং প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু হল আরামবাগের পল্লিশ্রীতে।
মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহের পরিকল্পনায় পিপিপি মডেলে পুরসভার সঙ্গে ওই প্রকল্পে শামিল হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। মহকুমাশাসক বলেন, “তৃতীয় ঢেউয়ের ব্যাপকতা থাকুক না থাকুক, আমরা তৈরি থাকছি। মহকুমার অক্সিজেনের চাহিদা মেটানোর পরে এখানকার বটলিং প্লান্টের মাধ্যমে তারকেশ্বর, হরিপাল এবং পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি, বাঁকুড়ার কোতলপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটাল-চন্দ্রকোনাও উপকৃত হবে।”
বর্তমানে হুগলির কোথাও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন প্লান্ট নেই। বটলিং প্লান্ট আছে মাত্র তিন জায়গায় (শ্রীরামপুর, মগরা এবং ডানকুনিতে)। নদিয়া, হাওড়া, বড়জোড়া-সহ কয়েকটি জায়গা থেকে তরল অক্সিজেন ওই সব প্লান্টে আনা হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য ইতিমধ্যেই সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ার সেন্টার, শ্রীরামপুর ওয়ালশ, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসাপাতাল এবং আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে। তার ছাড়পত্র এখনও মেলেনি। আরামবাগে বটলিং প্লান্ট গড়ার উদ্যোগকে প্রশংসা করছেন অতিরিক্ত জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম।
পুরসভা এবং মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং নার্সিংহোমগুলির জন্য অক্সিজেন দূর থেকে সিলিন্ডারে ভরে আনতে এমনিতেই খরচ বাড়ে। তার উপর এ বার করোনাকালে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিলিন্ডারপিছু ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত দাম নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, “এ বার হাতের কাছে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকছে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের বেশি দাম নেওয়া বা কালোবাজারিও রোখা যাবে। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই কাজটা যাতে শেষ হয় সেই চেষ্টা চলছে।’’
যে সংস্থা প্রকল্পে শামিল হয়েছে, তার অধিকর্তা-চিকিৎসক সুধাবিন্দু মল্লিক বলেন, “এখান থেকে দৈনিক গড়ে বি-টাইপ ৮০০ সিলিন্ডার থেকে ১০০০ সিলিন্ডার অক্সিজেন যাতে সরবরাহ করা যায় সেই রকম পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে। প্রকল্প খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। কাজ শেষ করে আগামী ১৫ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্টের মধ্যে প্লান্টটি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”