সাহায্য নিয়ে হাজির। নিজস্ব চিত্র।
ওঁদের কেউ নিজে হাতে রান্না করে দিচ্ছেন। কেউ বা ওষুধের প্যাকেট নিয়ে কোভিড আক্রান্তদের বাড়ির দোরগোড়ায় হাজির হচ্ছেন। কেউ আবার রাতবিরেতে ফোনে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড়ের আর্জি পেয়ে বন্দোবস্ত করে দিচ্ছেন। অক্সিজেন সিলিন্ডার বা কনসেনট্রেটর কোভিড-রোগীর বাড়িতে বয়ে দিয়ে আসতেও দেখা যাচ্ছে।
ওঁরা— কোভিড ভলান্টিয়ার্স। করোনাকালে সঙ্কটাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে কোন্নগরের বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন এবং কিছু যুবক একযোগে ওই দল গড়েছেন। শুধু কোন্নগরে আটকে না-থেকে, তাঁরা উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর এবং রিষড়াতেও পৌঁছে যাচ্ছেন নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী।
দিন কয়েক আগে উত্তরপাড়ার শিবতলা স্ট্রিটের একটি পরিবারের তিন সদস্যেরই কোভিড রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। পরিবারটি আতান্তরে পড়ে যায়। বাড়িতে ওষুধ আনার লোক ছিল না। ‘কোভিড ভলান্টিয়ার’দের কাছে ফোন যায়। অশোক গুহ নামে এক ভলান্টিয়ার দেরি না-করে ওই পরিবারে ওষুধ পৌঁছে দেন।
একই ভাবে কোন্নগর কানাইপুরের এক বাসিন্দা দিন কয়েক আগে মাঝরাতে ফোন করেন কোভিড ভলান্টিয়ার সুপর্ণা জানাকে। বাড়ির একজনকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য অ্যাম্বুল্যান্স প্রয়োজন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ফোনে যোগাযোগ অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবস্থা করে দেন সুপর্ণা। এমনকি কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি বা ফ্ল্যাট স্যানিটাইজ় করার জন্যেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছেন তাঁরা।
কোভিড ভলান্টিয়ারদের পক্ষে কোন্নগরের বাসিন্দা সৌরভ রায় বলেন, ‘‘মানুষ এখন দিশাহারা। আমরা পাশে থাকার চেষ্টা করছি মাত্র। সংক্রমিতদের জন্য সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজনীয় তথ্যও দিচ্ছি। অনেকে আমাদের সাহায্য করছেন।’’
ভলান্টিয়ার অসীম সরকার এবং অতনু পাল জানান, সংক্রমিতদের জন্য যত্ন করে খাবার রান্না করে দিচ্ছেন তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় নামে কোন্নগরের এক ছাত্রী। একই ভাবে হিন্দমোটরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ও লক্ষ্মীপ্রিয়া চক্রবর্তী নামে এক দম্পতিও খাবার রান্না করে দিচ্ছেন। তাঁরা শুধু নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দিচ্ছেন। একাধিক ওষুধ ব্যবসায়ী দুঃস্থ মানুষের দরকারি ওষুধ স্বল্প মূল্যে বা অনুদান হিসেবে দিচ্ছেন।
এই অসময়ে ভরসার হাত বাড়াচ্ছেন কোন্নগরের একদল যুবক।