কুলিয়াঘাটে পাকা সেতুর কাজ শুরুর উদ্যোগ। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে জয়পুরের কুলিয়ায় পাকা সেতু তৈরির জন্য নির্মাণ সামগ্রী আসা শুরু হল। খুশির হাওয়া ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা পঞ্চায়েত এলাকায়। গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে।
ছ’মাস আগে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার সময়ে পুলক রায় জানিয়েছিলেন, তাঁর কাজের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে কুলিয়া সেতু। গত ৯ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচলার প্রশাসনিক সভা থেকে ওই সেতুর ভার্চুয়াল শিলান্যাসও করেছিলেন। এ দিন মন্ত্রী পুলক বলেন, ‘‘জেলার মন্ত্রী হিসাবে আমি কুলিয়া সেতুর ব্যাপারে প্রথম থেকে উদ্যোগী হয়েছিলাম। এ ব্যাপারে পুরোপুরি সহায়তা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থ বরাদ্দ থেকে শুরু করে সব কিছুই সম্ভব হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য। দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’
ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা— এই দুই পঞ্চায়েত রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদী দিয়ে ঘেরা। জেলার ‘দ্বীপাঞ্চল’ নামে পরিচিত। সেতুর কাজের জন্য নির্মাণ সামগ্রী আসতে দেখে এ দিন ঘোড়াবেড়িয়ার বাসিন্দা হারুন রশিদ বলেন, "আমাদের এলাকার পক্ষে এটা দারুণ খবর।’’ ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের প্রধান সাবিনা বেগম, ভাটোরা পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক গায়েন এবং ওই এলাকা থেকে নির্বাচিত আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেলওয়ার হোসেন মিদ্দারা মনে করছেন, সেতুর কাজ শেষ হলে দ্বীপাঞ্চলের অর্থনীতি বদলে যাবে।
কুলিয়ায় সেতু নির্মাণের তোড়জোড় অবশ্য শুরু হয়েছিল বাম আমলে, ২০০৬ সালে। ওই বছর সেতুর শিলান্যাস হয়। সেতু তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা পরিষদকে। কিন্তু জেলা পরিষদ সেই কাজ করতে পারেনি। ২০১৮-তে হাওড়া জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি তোলেন পুলক রায়। মুখ্যমন্ত্রী ওই দিনই জেলা পরিষদের হাত থেকে সেতুর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের হাতে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই তৎপরতা শুরু করে পূর্ত দফতর। সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমিদাতাদের টাকা দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
এই সেতুর জন্য এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করেছেন আমতার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘২০০৬ সালে সেতুর কাজ শুরু হয়েও শেষ হয়নি। এ বারেও যেন অতীতের পুনরাবৃত্তি না হয়।’’ পূর্তমন্ত্রীর দাবি, আমাদের সরকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে না। সেতুর কাজ ঠিক সময়ে শেষ হবে।’’