ভিক্টোরিয়া জুট মিল। —ফাইল চিত্র।
বৈঠক হল, তবে জট কাটল না। ফলে ইদে বন্ধই থাকছে হুগলির ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া জুট মিল। পয়লা বৈশাখেও ২৮০০ শ্রমিকের এই কর্মস্থল খুলবে, এমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। ফলে উৎসবের মরসুমে এখানকার শ্রমিক মহল্লা বিমর্ষই।
শ্রমিকদের একাংশের অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে দিন কয়েক আগে ওই মিলে সাময়িক ‘সাসপেনশন অব ওর্য়াক’ নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। ফলে শ্রমিকেরা বেকায়দায় পড়েন। তাঁরা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন। নিয়ম মেনে মিল বন্ধের কথা শ্রম দফতরে জানানো হয়নি বলে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়।
ওই মিলের জটিলতা কাটাতে মঙ্গলবার দুপুরে চন্দননগর শ্রম দফতরের কার্যালয়ে বৈঠকে মিলের কর্তৃপক্ষ এবং হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ত্রিপাক্ষিক ওই বৈঠকে স্থির হয়েছে, আগামী শনিবারের পরে মিলের ১০টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা মিলের মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। মিলের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হবেন তাঁরা। তারপরে কলকাতায় শ্রম দফতরের কার্যালয়ে বসে মিল খোলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভিতরের সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত উৎপাদন চালুর জন্য এ দিন মিল কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানানো হয় সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের তরফে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে মিল কর্তৃপক্ষের তরফে উপস্থিত ছিলেন পার্সোনেল ম্যানেজার প্রদীপকুমার রাউত। মিল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শ্রমিকদের যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য তাঁদের পিএফের ঋণের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। ইএসআইয়ের সুবিধা পেতে যাতে সমস্যা না হয়, সেই কাজও চালছে। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শ্রমিকদের একটি অত্যন্ত ছোট অংশই কাজের গতিতে রাশ টানছেন। অন্যদের কাজ করতে দিচ্ছেন না। মিলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা দিনে মন দিয়ে টানা সাত-ঘণ্টা কাজ করলে উৎপাদনের হার যথাযথ হবে।সমস্যাই থাকবে না।’’
আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী এবং শ্রম দফতরের পদস্থ কর্তারাও ছিলেন। মনোজ বলেন, ‘‘মালিকপক্ষ মিলের কর্মসংস্কৃতি আর শৃঙ্খলার কথা বলছেন। আমরাও শ্রমিকদের সংগঠনগুলির তরফে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’’
শ্রমিকদের অবশ্য ক্ষোভ, কর্তৃপক্ষের বদলি নীতি সুষ্ঠু নয়। শ্রমিকদের সমস্যার ব্যাপারে তাঁরা আমল দেন না। উল্টে, উৎপাদনের শ্লথতা নিয়ে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।