উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। হাসপাতালে নামেই রয়েছে ডায়ালিসিস ও আইসিসি (ইন্টিগ্রেটেড কম্প্রিহেনসিভ কেয়ার) ইউনিট। কিন্তু টেকনিশিয়ানের অভাবে দীর্ঘদিন সেই পরিষেবা বন্ধ।
উলুবেড়িয়ায় মুম্বই রোডের ধারে ২১৬ শয্যার ইএসআই হাসপাতাল নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রোগীর পরিজনদের। কারখানার শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়াই কাজ কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে চলা এই হাসপাতালের। হাওড়া, হুগলি ও দুই মেদিনীপুরের প্রায় ৪৫ হাজার কর্মচারীর এখানে কার্ড করা রয়েছে। এর জন্য শ্রমিকদের বেতন থেকে টাকাও কাটে মালিকপক্ষ। অথচ এখানে চিকিৎসা করাতে আসা বহু শ্রমিকের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিষেবা মেলে না।
সম্প্রতি পাঁচলার একটি বেসরকারি কারখানার শ্রমিক মিঠুন জানা তাঁর দশ বছরের মেয়েকে এই হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁর অভিযোগ, ইমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে যেতেই জানানো হয়, সেখানে শিশুদের ডাক্তার নেই। রোগীকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। মিঠুনবাবুর ক্ষোভ, ‘‘ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা হলে আমার কোনও খরচ হত না। অথচ উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করানোয় যাতায়াত, ওষুধ নিয়ে অনেক টাকা বেরিয়ে গেল।’’
ক্ষোভের সুর চেঙ্গাইলের শেখ মুনতাজুল নামে এক জুট মিলের শ্রমিকের গলাতেও। তিনিও তাঁর এক আত্মীয়কে চিকিৎসা করাতে এনেছিলেন এই হাসপাতালে। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকার কারণ জানিয়ে সেই রোগীকেও অন্যত্র রেফার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মুনতাজুলের ক্ষোভ, ‘‘তা হলে বেতন থেকে এখানে চিকিৎসার জন্য টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে কেন? খরচ তো বেড়েই যাচ্ছে।’’ অন্য এক শ্রমিকের অভিযোগ, ‘‘আমার মায়ের ডায়ালিসিসও অন্যত্র টাকা খরচ করেই করাতে হয়েছে।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসপাতালের সুপার পঙ্কজকুমার সাঁতরা বলেন, ‘‘চিকিৎসক কম রয়েছেন, এটা ঠিক। টেকনিশিয়ানও নেই। এই দুই বিষয়েই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্র সমস্যা মিটবে।’’ তবে রেফার প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘রোগীর সঙ্কটজনক পরিস্থিতি হলে রেফার করা হয়। তার সঙ্গে কর্মী কম থাকার কোনও সম্পর্ক নেই।’’