বৈদ্যবাটী বনমালী মুখার্জি ইনস্টিটিউশনের সামনে বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের সাইকেল বিক্রির অভিযোগ উঠল হুগলির বৈদ্যবাটী বনমালী মুখার্জি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে সোমবার একটি গাড়িতে বোঝাই পুরনো জিনিসপত্র ও সাইকেল আটকে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রা। প্রধান শিক্ষক, এক শিক্ষাকর্মী এবং গাড়িচালককে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেলে বিক্ষোভ থামে। প্রধান শিক্ষক অমরনাথ ঘোষাল অভিযোগ মানেননি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিদ্যালয় থেকে তিনটি সাইকেল গাড়িতে তুলতে দেখে এলাকাবাসী ও প্রাক্তন ছাত্রেরা প্রতিবাদ করেন। বেলা দেড়টা থেকে এক ঘণ্টার বেশি এসিএম রোড অবরোধ করা হয়। যানজট হয়। শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ আসে। পুলিশ প্রথমে দুই শিক্ষাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাঁরা নির্দোষ, এই দাবিতে বিক্ষোভকারীরা বাধা দেন। পরে, প্রধান শিক্ষক, জয়ন্ত দাস নামে অন্য এক শিক্ষাকর্মী এবং গাড়িচালককে আটক করা হয়।
প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘সাইকেল বিক্রির অভিযোগ সত্যি নয়। কিছু পুরনো লোহা ভাঙা, পাইপ, বইপত্র বিক্রি করা হচ্ছিল নিয়ম মেনে। যিনি বরাত পেয়েছেন, তিনি না বুঝেই গুদাম থেকে সাইকেলগুলি গাড়িতে তুলে নেন। সাইকেলগুলি বহু পুরনো। কিছু অবশিষ্ট নেই।’’
এ কথা মানতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। পুরনো জিনিস কেনার বরাত পাওয়া সুজিত পাসোয়ান অবশ্য বলেন, ‘‘পুরনো বইপত্র, ভাঙাচোরা জিনিসের সঙ্গে দু’টি সাইকেল কিনেছি সাড়ে সাত হাজার টাকায়। একটি সাইকেল মেয়ের জন্য চেয়ে নিয়েছি।’’ সুজিতের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা তাঁকে মারধর করে।
গোলমালের খবর পেয়ে স্কুলে আসেন বৈদ্যবাটী-শেওড়াফুলি শহর তৃণমূল সভাপতি শ্যামলেন্দু মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, প্রধান শিক্ষক নতুন তিনটি সবুজ সাথীর সাইকেল বিক্রি করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা জানতে চাইলে, জবাব না-দিয়ে দুর্ব্যবহার করেন। শ্যামলেন্দু বলেন, ‘‘ছাত্রদের দেওয়ার জন্য পাঠানো সাইকেল বিক্রির অধিকার প্রধান শিক্ষকের নেই। পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি হোক।’’ স্কুলের সভাপতি দিলীপকুমার পাল বলেন, ‘‘সাইকেল বিক্রির কথা জানি না। শুনেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের তরফে শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।