Goghat

বিধায়কের প্রশ্রয়েই গাছ কাটার নালিশ গোঘাটে

সম্প্রতি গ্রামের কংসাবতী শাখা খালের ধার থেকে বেশ কিছু গাছ কাটা হয়।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

গোঘাট শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২৪
Share:

পঞ্চায়েত ভবনে রাখা কাটা গাছের গুঁড়ি (ডান দিকে)। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

এতদিন গোঘাটের কিছু প্রধান বা উপপ্রধানের মদতে বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ উঠছিল। এ বার খোদ বিধায়কের প্রশ্রয়েই গাছ কাটার অভিযোগ উঠল এখানকার হাজিপুর পঞ্চায়েত এলাকার তেঁহুড়িয়া গ্রামে।

Advertisement


সম্প্রতি গ্রামের কংসাবতী শাখা খালের ধার থেকে বেশ কিছু গাছ কাটা হয়। কোনও দফতরের অনুমতি না নিয়ে বিধায়কের প্রশ্রয়ে রমজান আলি নামে গ্রামের এক ব্যবসায়ী ওই কাজ করান বলে অভিযোগ। রমজানের দাবি, ‘‘পিরের থান উন্নয়নের জন্য বিধায়ক পাঁচটি গাছ নিতে বলেছিলেন। তাতে কাজ মিটছিল না। গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করেই আরও দু’টি গাছ কাটা হয়েছিল। পঞ্চায়েতও বিষয়টা জানে। অন্য গাছগুলি কে বা কারা কেটেছে জানি না।”


রমজানের সঙ্গে কোনও আলোচনার কথা অস্বীকার করেন গ্রামবাসী। পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। সব মিলিয়ে ৪৫টি গাছ কাটা হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। গাছ কাটার প্রতিবাদে ক’দিন আগে তাঁরা পঞ্চায়েত সদস্য মন্টু দাসের কাছে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মন্টু পুরো বিষয়টি বিধায়ককে জানিয়ে সোমবার কিছু কাটা গাছ পঞ্চায়েতে নিয়ে গিয়ে জমা রাখেন।

Advertisement


মন্টু বলেন, ‘‘দলের নেতাদের উপস্থিতিতে রমজানকে বিধায়ক শুকনো বা ঝড়ে হেলে পড়া চারটি গাছ কাটতে বলেছিলেন। পঞ্চায়েতের অনুমতিও ছিল। কিন্তু আরও তিনটি কাটা গাছ পড়ে থাকতে দেখেছি। কিছু গাছ উধাও হয়েছে। এ কথা জানাতে বিধায়ক সব গাছ পঞ্চায়েতের জিম্মায় রেখে থানায় গাছ চুরির অভিযোগ দায়ের করতে বলেছেন।”


বুধবার বিকেল পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে গোঘাট থানা জানিয়েছে। অভিযোগ নিয়ে বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, “ধর্মীয় ওই স্থানের উন্নয়নের জন্য পঞ্চায়েতকে বলেছিলাম, আইন মেনে ভাঙা বা হেলে পড়া খানতিনেক গাছ দেওয়ার জন্য। বেশি গাছ কাটার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠিয়ে যারা গাছ চুরি করছিল, তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি।” পঞ্চায়েত প্রধান সুলেখা ঘোষ দাবি করেছেন, “বেআইনি ভাবে কাটা গাছ পঞ্চায়েতে পৌঁছেছে, এটা জানি। সেগুলি এখন পঞ্চায়েতের জিম্মায় আছে। বাকি অনুমোদন সংক্রান্ত কোনও কিছু জানা নেই।”


পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সাল নাগাদ ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয় তেঁহুড়িয়ার কংসাবতী শাখা খালের ধারে। সেই সব গাছ দেখভালের জন্য গ্রামবাসীকেই উপভোক্তা হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তি হয়, গাছ পরিণত হলে বৈধ ভাবে তা কেটে বিক্রি হবে। গাছ বিক্রির টাকার ৫০%-৭৫% গ্রামবাসীরাই পাবেন। সেই কারণে গ্রামবাসীরা গাছ চুরির বিষয়ে সরব হয়েছেন। তদন্তের দাবি তুলেছেন।


বন দফতরের আরামবাগ চাঁদুর শাখার রেঞ্জ অফিসার রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গাছ কাটার জন্য দফথর থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement