ইমামবাড়া হাসপাতালে মৃতের পরিজনদের বিক্ষোভ সামলাতে আসরে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
ক’দিন আগেই দেরিতে ভর্তির সিদ্ধান্তে এক রোগিণীর মৃত্যুর ঘটনায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তাঁর পরিজনরা। বুধবার ফের এক রোগীর মৃত্যুতে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভ হল। অভিযোগ মানেননি হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পান্ডুয়ার বাসিন্দা শেখ হোসেন (৫৫) এ দিন সকালে জিটি রোডে মোটরভ্যানের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন। তাঁকে প্রথমে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। বিকেলের দিকে তিনি মারা যান।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বিকেলে চিকিৎসকেরা জানান শেখ হোসেন ভাল আছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই জানানো হয়, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের ছেলে শেখ সেলিম বলেন, ‘‘কিছুক্ষণের ব্যবধানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দু’বার দু’রকম কথা বললেন। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, বাবার মৃত্যুতে হাসপাতালের গাফিলতি রয়েছে।’’
মৃত্যুর খবরে হোসেনের পরিবারের লোকজন এবং বেশ কিছু এলাকাবাসী হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
তবে, মৃতের পরিবারের তরফ থেকে হাসপাতাল বা পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। হাসপাতালের সুপারের দাবি, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে, এ ক্ষেত্রে রোগীর চিকিৎসার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপই গ্রহণকরা হয়েছিল। তাঁর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের গাফিলতির লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
এই হাসপাতালেই গত ২১ নভেম্বর হুগলি স্টেশন রোডের বাসিন্দা গীতা পাসোয়ানের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত অবশ্য চলছে। বুধবার তাঁর পরিবারের লোকজনের শুনানি শুরু করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তিন সদস্যের তদন্ত-কমিটির সদস্যেরা মৃতার পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন। গীতার পুত্রবধূ উষা এ দিনের শুনানিতে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সে দিনের ঘটনার কথা জানতে চাওয়া হয়। আমরা চাই, এ ভাবে যেন আর কারও হাসপাতালে মৃত্যু না হয়। আর অপরাধ যাঁরা করেছেন, তাঁদের যেন শাস্তি হয়।’’
গীতার পরিবারের অভিযোগ, জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২০ নভেম্বর এবং তার পরের দিন মোট তিন বার গীতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। শেষে কাহিল অবস্থায় ফের নিয়ে যাওয়া হলে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু, চিকিৎসা শুরুর আগেই তিনি মারা যান। এ নিয়ে হাসপাতালে অশান্তি হয়। মৃতার পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া তদন্তে দু’টি ভিন্ন কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। অন্য কমিটিটি গড়া হয় জেলা স্তরে।