চুঁচুড়া আদালতে সারদা মামলায় মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন এবং তাঁর সঙ্গী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল ৪টে। দুটি পৃথক মামলায় সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং তাঁর সঙ্গী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে হাজির করানো হয়েছিল চুঁচুড়া আদালতে। বিচারক এসে গিয়েছেন। উপস্থিত সবাই। কিন্তু সরকারপক্ষের আইনজীবী সময় মতো হাজির হননি। মিনিট সাতেক পর এক কর্মী প্রায় দৌড়ে এসে সরকারপক্ষের আইনজীবীর হাতে এই মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেন। আর এ সব দেখেই তীব্র ভর্ৎসনা করলেন বিচারক। আদালতের সময় নষ্টের জন্য বিচারকের মন্তব্য, ‘‘ছেলেখেলা হচ্ছে!’’
চন্দননগর থানায় বিশ্বনাথ অধিকারী নামে এক সারদার এজেন্ট ২০১৩ সালে একটি মামলা করেছিলেন। এজেন্টদের দিয়ে টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে, এই অভিযোগে পোলবা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পাশপাশি, কর্মীদের পিএফের টাকা সংক্রান্ত আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়।
পোলবা এবং চন্দননগর থানায় দায়ের হওয়া এই দুটি মামলার শুনানির জন্য চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয় সারদাকর্তা ও তাঁর সঙ্গীকে। ওই দুটি মামলারই তদন্তভার রয়েছে রাজ্য পুলিশের হাতে।
সুদীপ্ত এবং দেবযানীর আইনজীবী মৃন্ময় মজুমদার আদালতে জানান, গত ১০ বছর ধরে তাঁর মক্কেলরা আটক রয়েছেন। তাই রাজ্য পুলিশের হাত থেকে সিবিআইকে এই দুটি মামলা হস্তান্তর করা হোক। এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় শোনান তিনি। যে কোনও শর্তে সুদীপ্ত এবং দেবযানীর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সওয়াল করেন, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রচুর মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। তার দায় এড়াতে পারেন না অভিযুক্তেরা। সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর আদালত অবশ্য সুদীপ্ত এবং দেবযানীর জামিন নাকচ করে দেন। শুনানির দিনও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আদালতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় সুদীপ্ত কোনও কথাই বলেননি। সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা তাঁকে একের পর এক প্রশ্ন করে গেলেও তিনি চুপ করেছিলেন। এক বার স্মিত হেসে এজলাসে চলে যান। একই ভাবে দেবযানীও কোনও মন্তব্য করেননি।