জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি চলছে চন্দননগরে। — নিজস্ব চিত্র।
চন্দননগরে এ বার পরিবেশের কথা মাথায় রেখে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে প্লাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার। মায়ের ভোগ নিবেদন হবে মাটির থালায়। বন্ধ থাকছে বাজি। বাজবে না ডিজে। এমনটাই জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির তরফে।
কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সুহৃদ ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর হাত ধরে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়েছিল প্রায় ২৭০ বছর আগে। চাউল পট্টি থেকে সেই পুজো কালে কালে গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, পাশের শহর ভদ্রেশ্বরেও চালু হয় পুজো। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির অধীনে রয়েছে ১৭৭টি পুজো। তার মধ্যে চন্দননগর থানার অন্তর্গত এলাকায় হয় ১৩৩টি পুজো, ভদ্রেশ্বরে হয় ৪৪টি।
এ বছর নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় ৬২টি পুজো অংশ নেবে। তাদের জন্য ২৩০টি লরি বরাদ্দ থাকবে। ১৭টি ঘাটে হবে প্রতিমা নিরঞ্জন। কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ সাউ জানান, চন্দননগরের ঐতিহ্যশালী জগদ্ধাত্রী পুজো সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি প্রত্যেক পুজো কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবীও থাকবে। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী থাকবে। সিসি ক্যামেরায় বসানো থাকবে মণ্ডপে। কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি জানিয়েছে, এ বার জগদ্ধাত্রী পুজো হবে পরিবেশবান্ধব।
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর মূল আকর্ষণ বড় বড় প্রতিমা, শোভাযাত্রা এবং আলোকসজ্জা। যদিও এখন অনেক থিমের মণ্ডপ তৈরি হয়। তবুও চন্দননগরের আলোর কারিকুরি দেখতে রাজপথে ভিড় জমে চারটে দিন। ১৯ নভেম্বর ষষ্ঠী। প্রতিমা তৈরি, মণ্ডপ, আলোক সজ্জার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। ২০-২২ ফুটের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা হয় চন্দননগরে। তাই বেশির ভাগ প্রতিমা মণ্ডপেই তৈরি হয়। মধ্যাঞ্চলের প্রতিমার চক্ষুদান করেন শিল্পী সুরজিৎ পাল। প্রতিমা তৈরি করেছেন তাঁর দাদা জগন্নাথ পাল। চন্দননগরের ২১টি জগদ্ধাত্রী প্রতিমা তৈরি করছেন জগন্নাথ। আর সব প্রতিমারই চক্ষুদান করছেন সুরজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিমার কাজ করি নিরামিষ খেয়ে। মনের মধ্যে একটা ভাব চলে আসে রং-তুলি নিয়ে কাজ করার সময়। অন্তর থেকে করার চেষ্টা করি। ১৫ বছর বয়স থেকে বাবার সঙ্গে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করি। দুর্গাপুজোয় উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে কাজ করি।’’