জাতীয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া শহরের একাধিক জায়গা আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। সেই সব আবর্জনা সরাসরি গিয়ে মিশছে খোলা নদর্মায়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি মানা হচ্ছে না একেবারেই। যার ফলে হাওড়ার একটি বিস্তীর্ণ অংশের পরিস্থিতি দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বুধবার এই মর্মেই মামলা দায়ের হয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। মামলার আবেদনের সঙ্গে অভিযোগের প্রমাণস্বরূপ যে সব ছবি দাখিল করা হয়েছে, তা দেখে পরিবেশ আদালতের মন্তব্য—এ তো ভয়ানক, নোংরা পরিস্থিতি! যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার, রাজ্য নগরোন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দফতর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, হাওড়া পুরসভা-সহ সব পক্ষকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে বলেছে আদালত। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি, ২০১৬ প্রণয়নে তারা কী কী পদক্ষেপ করেছে, হলফনামায় তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ মে।
তবে, এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তা হল, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার জন্য রাজ্য সরকারকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল আদালত। তারা নির্দেশ দিয়েছিল, ক্ষতিপূরণের ওই টাকা দিয়ে রাজ্য আলাদা তহবিল গড়বে। যা শুধুমাত্র বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে খরচ করা হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশ মতো সেই তহবিল তৈরিও করেছে রাজ্য।
যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশকর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, যদি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে কাজই হয়ে থাকে, তা হলে হাওড়ার বিভিন্ন অংশের এই অবস্থা হয় কী করে? এক পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘শুধু তো হাওড়া নয়, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি মানার ক্ষেত্রে বড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে।’’ মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘হাওড়া শহরের বিভিন্ন অংশ যেন ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ, তা গিয়ে মিশছে নদর্মায়। ফলে নিকাশি ব্যবস্থা অবরুদ্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টি হলেই ভুগতে হচ্ছে নাগরিকদের।’’