আরান্ডিতে বিজেপি কর্মীর বাড়ি ঘুরে দেখছেন মধুসূদন বাগ। নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে পুরশুড়ার ভেউটিয়ায় দুই বিরোধী দলের অশান্তি চলছিল। তারই জেরে রাতে বোমাবাজিতে গুরুতর আহত হল এক বিজেপি কর্মী। পিন্টু রায় নামে ওই কর্মীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুটি তাজা বোমা-সহ তিন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, পিন্টুর নিজের হাতেই বোমা ফেটেছে। তার বাড়ি এবং সঙ্গীদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২ টি তাজা বোমা এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় ধৃতদের নাম প্রশান্ত রায়, লক্ষ্মীকান্ত রায় এবং হিমাংশু রায়। মঙ্গলবার ধৃতদের আরামবাগ আদালতে পাঠানো হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের ফল ঘোষণার পর পুরশুড়া-সহ আরামবাগ মহকুমার চারটি কেন্দ্রে তৃণমূল হারলেও রাজ্যের জয়ের পর বিজেপি কর্মীদের মারধর, ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শুধু পুরশুড়া কেন্দ্রের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ২৭০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া হন। সেই ঘরছাড়াদের গত শনিবার থেকে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন বিজেপির পুরশুড়া বিধায়ক বিমান ঘোষ। ভেউটিয়া গ্রামের কয়েকজন ঘরছাড়াও ঘরে ফেরেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ফের ঘরছাড়া করার প্রসঙ্গ তুলে গ্রামের কর্ণ বাজারে সন্ধ্যা থেকেই দুই দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছিল। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের ফের ঘরছাড়া করার হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূল। পাল্টা বিজেপি নিজেদের পুরশুড়ায় জয়ের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে ঘরছাড়া করার হুমকি দেয়। সেই উত্তেজনার মাঝেই রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি শুরু হয়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা অঞ্চল সহ সভাপতি বাদশা মিদ্দার অভিযোগ, “তর্ক-বিতর্ক হলেও আমাদের ছেলেরা শান্তই ছিল। কিন্তু বিজেপির ছেলেরা আচমকা আরামবাগের রাগপুর এবং সিয়ারা গ্রামের লোকদের জমায়েত করে বোমাবাজি শুরু করল। সেই বোমাবাজি করার সময়েই পিন্টুর নিজের হাতেই বোমা ফাটে।”
পুরশুড়ার বিধায়ক তথা বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের অভিযোগ, “বিনা প্ররোচনায় আমাদের ছেলেদের উপর তৃণমূল বোমা নিয়ে হামলা করেছে। পিন্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আবার পুলিশ এবং শাসকদল যড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আমদের ছেলেদেরই ধরেছে। বিষয়টা দলের রাজ্য স্তরে জানানো হয়েছে।”
অন্য দিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পুরশুড়ার পরাজিত প্রার্থী দিলীপ যাদব বলেন, “আমরা যখন বিভিন্ন এলাকায় শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছি, তখন বিজেপি পরিকল্পিতভাবেই তা বানচাল করার চেষ্টা করছে। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।”