নীলবাড়ির লডা়ইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল জয় পেতেই বিজেপি থেকে শাসকদলে আসার ঢল নেমেছে। কোথাও জনসমক্ষে প্রচার করে, কোথাও আজীবন তৃণমূলে থাকার শপথ নিয়ে, নানা পন্থায় তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। তবে মঙ্গলবার হুগলি জেলার খানাকুলে কয়েক জন বিজেপি কর্মী যে ভাবে স্বেচ্ছায় মাথা মুড়িয়ে তৃণমূলে এলেন, তা বোধ হয় ছাড়িয়ে গিয়েছে আগের সব ঘটনাকে।
আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের উপস্থিতিতে খানাকুলের বলপাই গ্রামে বিভাস মালিকের নেতৃত্বে বেশ বিজেপি-র কয়েক জন কর্মী যোগ দিয়েছেন শাসকদলে। তৃণমূলে যাওয়ার পরেই তাঁরা জানিয়েছেন, বিজেপি-তে গিয়ে জীবনের সব থেকে বড় ভুল করেছিলেন। সে জন্য তাঁদের অনুশোচনা হচ্ছে। সেই ‘ভুল'-এর প্রায়শ্চিত্ত করতেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে মাথা মুড়িয়েছেন তাঁরা। স্বেচ্ছায় এ হেন ‘প্রায়শ্চিত্ত’-র সাক্ষী বোধ হয় এর আগে থাকেনি রাজ্য।
এর আগে বীরভূম জেলার লাভপুরের বিপ্রুটিকুরি এলাকায় টোটোয় মাইক লাগিয়ে বিজেপি করার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন দলবদ্ধ ভাবে কিছু মানুষ। ৩০/৩৫ জনের ওই দলটি মিছিল করে এলাকা ঘুরে গণ ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন জনতার কাছে। তাঁরা বলেছিলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের সময় রাজ্য সরকার ও পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজ সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করেছি। উত্তেজনার সৃষ্টি করেছি। মিথ্যা অপবাদ ও কুকীর্তির জন্য গ্রামবাসীদের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। শপথ করছি, এমন কাজ ভবিষ্যতে কোনও দিন করব না।’’ একই ছবি দেখা গিয়েছে, বোলপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শুঁড়িপাড়া এলাকায় এবং সাঁইথিয়ার বনগ্রাম এলাকায়। ওই জেলার নানুরের বাসাপাড়ায় প্রকাশ্যে শপথ বাক্য পাঠ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ওই এলাকার বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি করা ভুল হয়েছিল, আমৃত্যু তৃণমূলে থাকব।’’
কিন্তু খানাকুলে মাথা মুড়িয়ে নিজেদের ভুল বোঝানো ছাপিয়ে গিয়েছে এই সব ঘটনাকে।