বিটিএ-র অন্যতম সদস্য তথা ইন্ডিয়ান টেনিস ফেডারেশনের (আইটিএ) প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষক গ্যারি ও’ব্রায়েনের সঙ্গে প্রিয়াংশু ও স্বপ্নিল। নিজস্ব চিত্র
মাস কয়েক আগে গোটা রাজ্যের খুদে প্রতিভাবান টেনিস খেলোয়াড়দের খোঁজ (ট্যালেন্ট হান্ট) শুরু করেছিল বেঙ্গল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। সেই উদ্যোগের পোশাকি নাম ছিল ‘ফিউচার কিডস স্কিম’। তাতে যে ছ’জনকে নির্বাচন করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে হুগলির দু’জন। চন্দননগরের প্রিয়াংশু চক্রবর্তী এবং চুঁচুড়ার পিপুলপাতির স্বপ্নিল ঘোষ।
ওই টেনিস সংস্থা সূত্রে খবর, নির্বাচিত খেলোয়াড়দের সংস্থার খরচে ভবিষ্যতের তারকা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী আপাতত আগামী দু'বছর ওই দু'জনের খেলার যাবতীয় ব্যয়ভার গ্রহণ করবে সংস্থাটি। দক্ষতা প্রমাণ করলে চুক্তির মেয়াদ বাড়বে।
বছর এগারোর প্রিয়াংশু এবং স্বপ্নিলের টেনিসে হাতেখড়ি চুঁচুড়ার শতাব্দীপ্রাচীন ডিউক ক্লাবে। আপাতত দু'জনেই কলকাতায় বিটিএ-র শিবিরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে বিটিএ-র তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে তারা। জেলা ও রাজ্য স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক ভাবে সাফল্য অর্জন করেছে হুগলির দুই বালক।
নিজেদের দুই শিক্ষানবিশ রাজ্য টেনিস সংস্থার বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে সুযোগ পাওয়ায় খুশি চুঁচুড়ার ক্লাবটিও। এই ক্লাবের সম্পাদক তথা প্রাক্তন জাতীয় টেবিল টেনিস খেলোয়াড় অসীমকুমার দত্ত বলেন, ‘‘প্রিয়াংশু-স্বপ্নিল দু'জনেরই প্রতিভা রয়েছে। ভবিষ্যতে বড় সাফল্য পেতে গেলে যে ধরনের প্রশিক্ষণ-পরিকাঠামো দরকার, সেটা ওখানে পাবে ওরা।’’
দিন পনেরো আগে ডিউক ক্লাবে এসেছিলেন বিটিএ-র অন্যতম সদস্য তথা ইন্ডিয়ান টেনিস ফেডারেশনের (আইটিএ) প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষক গ্যারি ও’ব্রায়েন। অসীম বলেন, ‘‘আমাদের কোর্টে উনি (গ্যারি)প্রিয়াংশু ও স্বপ্নিলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে গিয়েছেন। মফস্সলের কোর্ট দেখে তিনি খুশি। বিটিএ-র প্রশিক্ষণে সুযোগ পাওয়া দু'জনকে নিয়ে তিনি আশাও প্রকাশ করে গিয়েছেন।’’
চুঁচুড়ার ক্লাবটিতে টেনিসের কোচ অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘টেনিস খরচসাপেক্ষ খেলা। তাই ছেলে-মেয়েদের প্রতিভা থাকলেও অনেক বাবা-মা’ই পিছু হটেন। সে ক্ষেত্রে বিটিএ-র এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।’’
স্বপ্নিলের বাবা সুমন্ত ঘোষ পেশায় ব্যবসায়ী। ছেলের প্রাথমিক সাফল্যে খুশি। তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ থাকায় ছ’বছর বয়সে ছেলেকে ডিউক ক্লাবের টেনিস বিভাগে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। প্রায় একই সময় সেখানে প্রশিক্ষণ শুরু করে প্রিয়াংশুও। দু’জনেই সুযোগ পাওয়ায় ভাল লাগছে। আশা করছি ভবিষ্যতে ওদের সেরাটাবেরিয়ে আসবে।’’
প্রিয়াংশুর বাবা পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী মিঠুন চক্রবর্তীও স্বপ্ন দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে বিটিএ-র বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে সুযোগ পেয়েছে, ভাল তো লাগবেই। স্কুল থেকে আপাতত সপ্তাহে দু'দিন ছুটির অনুমতি মিলেছে। সব মিলিয়ে সপ্তাহে চার দিন করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে কলকাতায়। আশা করছি, ওর ভবিষ্যতটা ভাল হবে।’’