গড়মান্দারণ পর্যটন কেন্দ্র (উপরে)। ছেঁড়া তারজালের বেড়া দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
হুগলি জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস নাগাদ ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শুরু হয়েছিল গোঘাটের গড়মান্দারণ পর্যটন কেন্দ্রের প্রথম দফায় সৌন্দর্যায়নের কাজ। দশটি কাজ শেষ করার কথা ছিল এক বছরের মধ্যে। অথচ, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এসেও সেই কাজ শেষ হয়নি।
পর্যটক ছাউনি, চারটি কটেজ, লক্ষ্মী জলার উপরে কাঠের সেতু-সহ কিছু কাজ হয়েছে ঠিকই, তবে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচিল তৈরি হয়নি। কিছু জায়গা অস্থায়ী ভাবে তার জাল দিয়ে ঘেরা হলেও ফাঁকা অংশ দিয়ে গরু-ছাগল ঢুকছে। অনুপ্রবেশ ও অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগও আছে। এ ছাড়া, পর্যটন কেন্দ্র জুড়ে গানবাজনার ব্যবস্থা (সাউন্ড স্ক্যাপিং)-এর কাজও বাকি।
জেলা পরিষদের ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার মহাজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, ‘‘কাজ থমকে বা গতিহীন নেই। পাঁচিল তৈরি এবং সংস্কারের জন্য দরপত্র ডাকা হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। সাউন্ডস্ক্যাপিং ব্যবস্থাও দ্রুত হয়ে যাবে।’’ দ্বিতীয় দফায় কাজের জন্যেও প্রকল্প রচনা করে পাঠানো হয়েছে। তাঁর দাবি, দফায় দফায় গড়মান্দারণ পর্যটন কেন্দ্রকে সাজিয়ে তোলা হবে।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাসের পটভূমি গাছ-গাছালি ঘেরা গড়মান্দারণে বছরভর পিকনিক দলের ভিড় থাকে। শীতে মরসুমে সেই ভিড় উপচে পড়ে। রামকৃষ্ণদেবের জন্মস্থান গোঘাটের কামারপুকর তীর্থক্ষেত্র থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের এই গড়মান্দারণে প্রবেশমূল্য মাথা পিছু ১৫ টাকা। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০০ একর এলাকা নিয়ে গড়মান্দারণ পর্যটনকেন্দ্রকে সাজিয়ে তোলার অন্যতম বাধা ছিল, ভিতরে থাকা ব্যক্তি মালিকানাধীন ৫২ বিঘা জমি। কোনও শর্তেই সংশ্লিষ্ট জমির মালিকেরা জমি ছাড়তে রাজি হচ্ছিলেন না। অবশেষে সেই সব জমির অংশ ছেড়েই পর্যটন কেন্দ্রের জায়গা চিহ্নিত করে অস্থায়ী তার জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। সেখানে স্থায়ী পাঁচিল করা হবে।
দ্বিতীয় দফার কাজগুলির মধ্যে রয়েছে, লক্ষ্মী জলায় নৌকো বিহারের ব্যবস্থা, কাজলা দিঘি, লস্কর জলা সংস্কার এবং নৌকো বিহার, ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া আমোদর নদ সংস্কার ইত্যাদি। জীববৈচিত্র পার্কেরও পরিকল্পনা আছে। ভবিষ্যতে ময়ূর উদ্যান এবং হরিণ প্রমোদ উদ্যানেরও ভাবনা আছে।