অন্য বর্জ্যের পাশাপাশি যাবতীয় তরল বর্জ্য গিয়ে গঙ্গায় মিশছে। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন একাধিক হোটেল থেকে উচ্ছিষ্ট খাবার, অন্য বর্জ্যের পাশাপাশি যাবতীয় তরল বর্জ্য গিয়ে গঙ্গায় মিশছে। সেই সঙ্গে রেল সংলগ্ন এলাকার খাটালের গোবর এবং শৌচালয়ের সেপটিক ট্যাঙ্কের বর্জ্যও সরাসরি মিশছে নদীতে। হাওড়া রেল স্টেশন সংলগ্ন হোটেলগুলি কী ভাবে পরিবেশবিধি লঙ্ঘন করছে, সেই সংক্রান্ত মামলায় এই মর্মেই হলফনামা জমা দিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
ওই এলাকার পরিস্থিতি কী, তা সরেজমিনে দেখার জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই মতোই পর্ষদের তরফে গত ১৪-১৬ সেপ্টেম্বর এবং ২৬ সেপ্টেম্বর, দুই দফায় পরিদর্শন করা হয়। তার ভিত্তিতেই এই হলফনামা দাখিল করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি ছিল পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ জানুয়ারি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পর্ষদ জানতে পারে, ওই হোটেলগুলি দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকলেও তার মধ্যে আটটি হোটেল ‘কনসেন্ট টু এস্টাব্লিশ’-এর ছাড়পত্র নিয়েছে। আর তিনটি মাত্র হোটেল ‘কনসেন্ট টু এস্টাব্লিশ’ এবং ‘কনসেন্ট টু অপারেট’ ছাড়পত্র নিয়েছে। পর্ষদ আরও জানিয়েছে, প্রায় ২৫টি অস্থায়ী হোটেল গঙ্গাতীরে জবরদখল করেছে। সংশ্লিষ্ট হোটেলগুলি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর (কলকাতা বন্দর) কর্তৃপক্ষকে ভাড়া দিয়ে জায়গা নিয়েছে বলে পর্ষদ জানিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জায়গা ভাড়া নেওয়া হোটেলের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেওয়ার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে পর্ষদ। একই সঙ্গে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করার আবেদন করা হয়েছে। গঙ্গার দূষণ ঠেকাতে তরল বর্জ্য নিকাশি লাইনের মাধ্যমে রেলের বর্জ্য পরিশোধন প্লান্টে নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্ষদ সুপারিশ করেছে। মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘হোটেলগুলি যে সরাসরি গঙ্গায় তরল বর্জ্য ফেলছে, তা পর্ষদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। পুরো জায়গাটা চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর হয়ে রয়েছে। প্রশাসনের তরফে যথাযথ পদক্ষেপ করা ছাড়া এই ঘটনা বন্ধ করা যাবে না।’’