হাওড়া আদালতে ধৃত রাজেশ। নিজস্ব চিত্র।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভিনরাজ্যেও প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল সেনাবাহিনীর জওয়ান রাজেশ প্রসাদ। বিহার,ওড়িশা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ৩০ জন বেকার যুবকের থেকে টাকা নিয়েছিল সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে। প্রত্যেকের থেকে নগদ তিন লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।
আর সেই প্রতারণার টাকাতেই রাজেশের হাওড়ার সাঁকরাইলের রাজগঞ্জ এলাকায় তার একতলা বাড়ি দোতলা হয়ে গিয়েছিল। বসেছিল মার্বেল। দু’চাকা এবং চারচাকার গাড়িও কিনে ফেলেছিল সে। অভিযোগ, প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন ধৃত রাজেশের বাবা এবং মা। তাঁরাই বছর তিনেক আগে প্রতিবেশীদের জানিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীতে লোক নিয়োগ হচ্ছে। এবং সেই চাকরি তাঁর ছেলে করে দিতে পারবে। তখন পুণেতে পোস্টিং ছিল রাজেশের। মাঝেমধ্যে বাড়ি এসে এলাকার বেকার যুবকদের সাথে আলাপ জমিয়ে ফেলেছিল সে। চাকরির দেওয়ার টোপ দিয়ে টাকাও নিতে থাকে।
অনেকে রাজেশের বাড়ি গিয়ে তাঁর বাবা-মাকেও টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।বছর দেড়েক আগে রাজেশ কলকাতায় বদলি হয়। প্রতারিত যুবকরা জানান, তাঁদের পুণে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। সেখানে অন্য রাজ্য থেকেও যুবকেরা এসেছিলেন। কিন্তু সকলকে ফাঁকা মাঠে দাড় করিয়ে রেখে হোটেলে চলে যেতে বলা হয়। রাজেশ জানিয়েছিল পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। সেনাবাহিনীর অন্য অফিসারদের টাকা দেওয়া আছে। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই।
এরপর বছর গড়িয়ে গেলেও চাকরি মেলেনি। অনেকেই আঁচ করেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। এরপর টাকা ফেরতের জন্য চাপ দেওয়া হলে চেক দেয় রাজেশ। কিন্তু সেই চেক বাউন্স হয়। অভিযুক্ত জওয়ান, বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে থাকে গত কয়েকমাস ধরে। চাকরিতেও যোগ দেয়নি। অবশেষে সাঁকরাইল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার রাজেশকে পেশ করা হয় আদালতে। বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতের মা জানান, কারও কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়া হয়নি। তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।