হাটে চলছে বিকিকনি। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
শহরের ভাষা বাগান থেকে সরল শ্রীরামপুরের পশুপাখির হাট। তবে, নিশান ঘাটের পাশেই গঙ্গার ধারে খোলা আকাশের নীচেই রবিবার সাপ্তাহিক এই হাট বসল।
এ দিন বেলা পৌনে ১টা নাগাদ হাটে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টিতে প্রাণীদের খাঁচার উপরে পলিথিনের আচ্ছাদন। ঘন ঘন মেঘের গর্জন। বিক্রেতারা জানান, সকাল থেকে ভালই ভিড় ছিল। বৃষ্টি নামতেই ফাঁকা হয়ে যায়।
পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা বলেন, ‘‘দাবি যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের মতামতকে মান্যতা দিয়েই হাট সরানো হল।’’ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি তথা পুর-পারিষদ সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘মানুষের আবেগের কথা ভেবে নিশান ঘাটের অন্য প্রান্তে হাট সরানো হল।’’
ভাষা শহিদদের স্মৃতিতে পুরসভা গঙ্গাপাড়ে ভাষা বাগান তৈরি করে কয়েক বছর আগে। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে প্রতি রবিবার এখানে পশুপাখির হাট বসা শুরু হয় পুরসভার উদ্যোগে। প্রখর রোদে কুকুরছানা, পাখিদের খাঁচাবন্দি করে বিক্রি নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া হয়। বহু মানুষ সমাজমাধ্যমেও প্রতিবাদ জানান। পুরপ্রধানের উদ্দেশে খোলা চিঠি দেওয়া হয়। দাবি ওঠে, খোলা আকাশের নীচে নয়, পশুপাখিদের নিয়ে হাট বসানো হোক কোনও ছাদের তলায়।
এর পাশাপাশি, ভাষা বাগানকে বেচাকেনার স্থানে পরিণত করা ভাষা শহিদদের প্রতি অসম্মানের শামিল এবং ওই স্থানের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। ভাষা বাগানে ‘আ মরি বাংলা ভাষা’ সংগঠন ভাষা দিবসে অনুষ্ঠান করে। ওই জায়গা থেকে হাট সরানোর আর্জি জানান ওই সংগঠনের সদস্যরাও।
সার্বিক ভাবে প্রতিবাদ দানা বাধতেই পুর-কর্তৃপক্ষ হাট সরানোর সিদ্ধান্ত নেন। সন্তোষ জানান, পশুপাখিপ্রেমীদের কথাকে মান্যতা দিয়ে পশুপাখিকে রোদবৃষ্টি থেকে বাঁচাতে শুধু হাটের সময় অস্থায়ী ছাউনির ব্যবস্থার কথা ভাবা হবে।
গঙ্গাপাড়েই হাট বসাতে পুরসভা মনস্থ করলেও এখানে, বিশেষত ‘হেরিটেজ জ়োন’ ঘোষণার দাবি ওঠা ওই জায়গা (গঙ্গার পাড়) কোনও কিছুতেই ‘আড়াল’ করার পক্ষপাতী নন শহরবাসীর একাংশ।