চলছে মাটি সংগ্রহ। শনিবার ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরে। নিজস্ব চিত্র।
পড়শি দুই জেলার দু’টি জনপদ। একটি তাঁর জন্মস্থান। অন্যটি বার্ধক্যের আশ্রয়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোঁয়ামাখা এই দুই স্থানের মেলবন্ধন ঘটানোর উদ্যোগ শুরু হল। আগামী মঙ্গলবার শরৎচন্দ্রের মৃত্যুদিন। তার আগে শনিবার হুগলির দেবানন্দপুরে কথাশিল্পীর জন্মভিটের মাটি হাওড়ার সামতাবেড়ে তাঁর ‘বার্ধ্যক্যের বারাণসী’তে নিয়ে গেলেন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল। সম্প্রতি দেবানন্দপুরে পর্যটনকেন্দ্রের প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন সুকান্ত দেবানন্দপুরে এসে শরৎচন্দ্রের জন্মভিটে এবং আশপাশে তাঁর স্মৃতিধন্য জায়গা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। এখানে একটি গাছ লাগান সুকান্ত। জানান, এখানকার মাটি নিয়ে গিয়ে তাতে সামতাবেড়ে একটি গাছ লাগানো হবে দুই জায়গার মেলবন্ধনের স্মারক হিসাবে। আগামী ২১ জানুয়ারি সামতাবেড়ে ৫২তম ‘শরৎ মেলা’ শুরু হবে। শরৎ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও শরৎ মেলা পরিচালন সমিতির পরিচালনায় মেলা চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। ওই মেলার সূচনার প্রাথমিক পর্বের কাজ দেবানন্দপুর থেকে শুরু হল বলেও সুকান্ত মন্তব্য করেন।
অসিত বলেন, ‘‘এই মিলনের বাতাবরণ কেউ আগে তৈরি করেননি। সুকান্ত করলেন। এই ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে, সেই চেষ্টা করব। শরৎচন্দ্রকে নিয়ে অনুষ্ঠানে সরকারি স্তরে যাতে দুই জেলার সমন্বয় থাকে, সে ব্যাপারে দুই জেলার জেলাশাসককে অনুরোধ করব।’’
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন দেবানন্দপুরের সাধারণ মানুষ। তাঁদের অনেকেই চান, এখানে প্রস্তাবিত পর্যটন প্রকল্পের কাজ ফেলে না রেখে দ্রুত শুরু করা হোক। আগামী বছর কথাসাহিত্যিকের জন্মের সার্ধ-শতবর্ষ। তার আগে তাঁর বাল্যকালের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থান নতুন রূপে সেজে উঠুক। নিলয় পাল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘দুই বিধায়কের উদ্যোগে যে সমন্বয় হচ্ছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। সামতাবেড়কে যে ভাবে মানুষের কাছে পরিচিত করা হচ্ছিল, কিন্তু জন্মস্থান দেবানন্দপুর সে ভাবে মানুষের কাছে পরিচিত হতে পারছিল না, তা কষ্টদায়ক ছিল। সেই কষ্ট ঘুচতে চলেছে।’’
অসিতের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী পর্যটনকেন্দ্রের কথা ঘোষণা করেছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে দু’কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। পরে পরিস্থিতি বুঝে আরও অর্থ মিলবে। তিনি বলেন, ‘‘পর্যটনকেন্দ্র যখন পুরোপুরি হয়ে যাবে, সব ব্যবস্থা হবে। তখন দেবানন্দপুরের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোও বদলে যাবে। আমরা চাই, দেবাবন্দপুর এবং সামতাবেড় এক সঙ্গে কাজ করবে।’’