টানা এক সপ্তাহ ধরে জলবন্দি হয়ে থাকার পর পুরসভার ব্যর্থতার প্রতিবাদে হাওড়া সালকিয়া চৌরাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ।
জল জমার প্রতিবাদে রবিবারের পরে সোমবারেও হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ভুক্তভোগী মানুষ। বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃষ্টির জল এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত দিনের পর দিন জমে থাকে বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে পথ অবরোধ হয় ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের ইছাপুরের কাছে। পরে অবরোধ হয় ওই রাস্তার জেড রোডে। বেলা ১১টা থেকে অবরোধ চলে দুপুর ২টো পর্যন্ত।
অবরোধকারীদের দাবি, শিবপুরের বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের আশ্বাস দিলে তবেই অবরোধ উঠবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পুর প্রশাসক ও অতিরিক্ত পুর প্রশাসক ঘটনাস্থলে গেলে অবরোধকারীরা তাঁদের কোমর জলে নেমে এলাকা ঘুরতে বাধ্য করেন। পুর প্রশাসকের দাবি, ‘‘যে সব এলাকায় জল জমা নিয়ে বিক্ষোভ, সেগুলি ২০-৩০ বছরের পুরনো সমস্যা। নিকাশি দফতরের আধিকারিকদেরই সে বিষয়ে আমাকে জানানো উচিত। কিন্তু, সেই খোঁজই কেউ রাখেন না। আধিকারিকেরা সক্রিয় হলে এ ভাবে জল জমত না। আজ, আধিকারিকদের বলেছি, সক্রিয় ভাবে কাজ করতে হবে।’’
জমা জলের প্রতিবাদে রবিবারই প্রায় দু’ঘণ্টা সালকিয়া চৌরাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান উত্তর হাওড়ার বাসিন্দারা। পরদিনই ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার হাঁটু-জলে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে অবরোধ করেন এলাকাবাসী। বাসিন্দা সন্দীপ ঘোষ, শৌভিক ঘোষ ও সুব্রত সরকারেরা বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টি হলেই ইছাপুর, ডুমুরজলা এইচআইইটি আবাসন চত্বর ও আনন্দময়ী আশ্রম সংলগ্ন ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের সরকারি আবাসনে এক কোমর-জল দাঁড়ায়। সেই জল নামতে এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় লাগে। বার বার হাওড়া পুরসভাকে চিঠি দিয়েও সংস্কার হয়নি বলেই অভিযোগ। সাফাইকর্মীরা এক বার পাঁক তুলে চলে যান। আর তাঁদের দেখা মেলে না। বিক্ষোভকারীদের আরও অভিযোগ, পঞ্চাননতলার সব জল এই দিক দিয়ে সরানোয় সমস্যা বেড়েছে।
এ দিন দীর্ঘ সময়ের অবরোধের জেরে ইছাপুর চৌরাস্তা ও ড্রেনেজ ক্যানাল রোড-সহ হাওড়া আমতা রোডে যানজট ছড়ায়। পরিস্থিতি সামলাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়। বাসিন্দাদের দাবি, শিবপুরের বিধায়ক, হাওড়ার সাংসদ ও হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন না এলে অবরোধ তোলা হবে না। এর পরেই দুপুর ২টো নাগাদ ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে যান পুর চেয়ারপার্সন। তখনই তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, যে জায়গায়গুলিতে জল জমছে, সেখানে বেশি অশ্বক্ষমতার পাম্প পাঠিয়ে জল সরানোর সাময়িক ব্যবস্থা হয়েছে। তবে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা হিসাবে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে পাম্প হাউস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।