চাষির বাড়িতে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
বাজারে পেঁয়াজের দামের ঝাঁঝ নিয়ন্ত্রণে আনতে বলাগড়ে পেঁয়াজ চাষিদের বাড়ি বাড়ি গেল প্রশাসন। দাম মধ্যবিত্তের নাগালে আনতে এখান থেকে পেঁয়াজ কিনে সুফল বাংলা-র স্টলে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। খুচরো বাজারে এখন পেঁয়াজ বিকোচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে। সুফল বাংলা-য় তার চেয়ে কম দামে বিক্রি করা হবে বলে প্রশাসন
সূত্রে খবর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ দিনের মধ্যে আনাজের মূল্যবৃদ্ধি বাগে আনার র্নিদেশ দিয়েছেন প্রশাসনকে। নাসিক-নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় চাষিদের থেকে পেঁয়াজ কেনার কথাও বলেন তিনি।
হুগলিতে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয় বলাগড় ব্লকে। যদিও এখানকার চাষিদের বরাবরের অভিযোগ, পেঁয়াজ সংরক্ষণ এবং বিপণনের ব্যবস্থা ভাল নয়। বুধ এবং বৃহস্পতিবার এই ব্লকের জিরাট, সিজা কামালপুর, বাঁকুলিয়া ইত্যাদি পঞ্চায়েত এলাকায় পেঁয়াজ চাষিদের বাড়িতে যান বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিখা মণ্ডল প্রামাণিক। চাষিদের বাড়িতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের ঘর পরিদর্শন করেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বলাগড়ে ‘সুখসাগর’ প্রজাতির পেঁয়াজ হয়। গত মরসুমে চাষ হয়েছে ২৩২০ হেক্টর জমিতে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জানান, প্রশাসন আপাতত ৪০ টন পেঁয়াজ এখানকার চাষিদের থেকে কিনবে ৩২ টাকা কেজি দরে। সেই পেঁয়াজ সুফল বাংলা-র স্টলে বিক্রি করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘খুচরো বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই পদক্ষেপ। এতে চাষি এবং ক্রেতা— উভয় পক্ষই উপকৃত হবেন। আশা করছি, এখন কিছুদিন সুফল বাংলা স্টলের জন্য এখানকার চাষিদের থেকে পেঁয়াজ কেনা হবে বাজারদর বিবেচনা করে।’’ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শেখ জালালুদ্দিনের কথায়, ‘‘অনেক সময় ফড়েদের জন্য আনাজের দাম বাড়ে। সেই কালোবাজারি রুখতে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে। চাষিরাও সুফল পাবেন।’’
বাকুলিয়ার চাষি অসিত নায়েক জানান, গত মরসুমে অতিবৃষ্টিতে তাঁর ২০ বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। কিছু পেঁয়াজ বেঁচে গেলেও দাম না থাকায় বিক্রি করেননি। বাড়িতে খেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে নাসিকের পেঁয়াজের উপর নির্ভর করেন মানুষ। আমাদের পেঁয়াজ সুফল বাংলায় নিলে তো ভালই। তবে, দু’দিন নিয়ে বন্ধ করলে হবে না। বছরভর নিতে হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পেঁয়াজ সংরক্ষণ নিয়ে প্রশাসন ভাবে না! এই দিকটাও তাদের নজর
দেওয়া দরকার।’’