রেশন কার্ড দেখিয়ে খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করা হচ্ছে। গোঘাট এলাকায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
নানা সময়ে হুগলিতে ভুয়ো রেশন কার্ড নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। তা উদ্ধারে ২০১১ সাল থেকে তল্লাশি চালিয়েও বিশে, হদিস করতে পারেনি খাদ্য দফতর। অবশেষে গত জুলাইয়ের গোড়া থেকে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগের ব্যবস্থাপনা হতেই হুগলিতে ৬০ হাজার রেশন কার্ডকে ‘সন্দেহজনক’ বলে চিহ্নিত করল খাদ্য দফতর। অর্থাৎ, যে সব কার্ডের মালিক হয় মারা গিয়েছেন, নয়তো অন্যত্র চলে গিয়েছেন।
ওই ৬০ হাজার রেশন কার্ডকে আপাতত ‘সম্ভাব্য ভুয়ো’ হিসেবে দেখছে জেলা খাদ্য দফতর। জেলা খাদ্য নিয়ামক অসীমকুমার নন্দী বলেন, “জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পুরসভা মিলিয়ে মোট ৬০ হাজার রেশন কার্ড সন্দেজজনক বলে চিহ্নিত হয়েছে। ওই সব কার্ডের মালিকদের আগামী দু’মাসের মধ্যে বায়োমেট্রিক তথা বুড়ো আঙুলের ছাপ দিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে হবে। না দিলে ওই সব রেশন কার্ড ভুয়ো হিসেবে বাতিল করা হবে।”
তবে, জেলা রেশন ডিলার সংগঠনের সম্পাদক অভিজিৎ রায় বলেন, “ওই সব বাতিল কার্ডলগুলিকে ভুয়ো বলা ঠিক হবে না। স্থানীয় মানুষ এবং কিছু পঞ্চায়েতের অসহযোগিতায় মৃত, বিবাহিত বা অন্যত্র চলে যাওয়া লোকজনের কার্ডগুলি সংশ্লিষ্ট পরিবারের কাছে থেকে গিয়েছিল। সে খবর আমাদের জানানো হয়নি বা কার্ড ‘সারেন্ডার’ করা হয়নি।’’
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, হুগলিতে বর্তমানে মোট ৬২ লক্ষ রেশন কার্ড আছে। ভুয়ো রেশন কার্ড নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এক শ্রেণির রেশন ডিলারের সঙ্গে খাদ্য সরবরাহ দফতরের এক শ্রেণির আধিকারিকদের যোগসাজশ বা এক শ্রেণির ডিলার-খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের ত্রিমুখী যোগসাজশে ওই সব ভুয়ো রেশন কার্ড থেকে যাচ্ছিল বলে ক্ষোভ-বিক্ষোভও ছিল। খাদ্য সরবরাহ দফতরের ব্যাখ্যা ছিল, মানুষের সচেতনতার অভাব এবং উদাসীনতার জন্যই ভুয়ো রেশন কার্ডের রমরমা। যেমন মৃত্যুর খবর আসে না, পরিবারের মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে বা কেউ অন্যত্র বসবাস করলে সে খবরও পাওয়া যায় না।