সোহেলের বালু শিল্প। নিজস্ব চিত্র।
দেশ বিদেশের কোটি কোটি মানুষ আজ নানা ভাবে ভারতের কৃষক আন্দোলনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বাদ নেই সমাজের কোনও স্তরের মানুষ। সেই আগুনেই নিজের শিল্প দিয়ে ইন্ধন যোগানোর চেষ্টা করলেন চন্দননগরের এক শিল্পী। বছর বাইশের তরুণ মহম্মদ সোহেলের বালু শিল্পের মাধ্যমে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা ফুটিয়ে তুললেন ক্যানভাসে।
ভাস্কর্য নিয়ে কলকাতা আর্ট কলেজে পড়াশোনা সোহেলের। এমনিতে পেন্সিল আঁচড়ে বন্যপ্রাণকে ক্যানভাসে জীবন্ত করে তুলতে ভালবাসেন। তবে এবার দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে তুলে নিয়েছেন এক মুঠো বালি। আর আলোর উপর রাখা এক টুকরো কাচে সেই বালি ছড়িয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন দীপ্ত দৃঢ় এক কৃষকের প্রতিচ্ছবি। যাঁর এক পাশে দেখা যাচ্ছে শস্য আর এক দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা সরকারের সেই পেরেক। সোহেলের এই প্রতিবাদী ছবি এখন এলাকার মানুষের চর্চার বিষয়।
এমনিতে চোখের সামনে ভেসে আসা কাশের বন দুর্গার আগামী বা চন্দননগরের ঘাট সব কিছুই তাঁর পেন্সিল তুলির টানে জীবন্ত হয়ে ওঠে। তবে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে হাতিয়া করেছেন ছোটবেলার সেই লাইট ট্রেসিংয়ের ধুলো জমা বাক্সে আঙুল চালানো থেকে তৈরি হওয়া বালু শিল্পের প্রতি তৈরি হওয়া টানকেই।
ক্যানভাসের সামনে সোহেল। নিজস্ব চিত্র।
সোহেল কথায়, “শিল্পীরা সমাজের আয়না। সমাজের দুরাবস্থা আশা অনুভূতি আবেগ সবই শিল্পীর সৃষ্টিতে উঠে আসে। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশে কৃষিই জীবনরেখা। কিন্তু সেই কৃষিজীবীদের আর্তনাদ যেন আজ কেউ শুনতে পাচ্ছেন না। উল্টে ক্ষমতাবান শ্রেণি দেশের অন্নদাতা এই কৃষকদের সঙ্গে যেন শত্রুর মতো আচরণ করছে। আন্দোলনের পথে বিছিয়ে দিচ্ছে লোহার কাঁটা। গোটা পৃথিবী এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এর চেয়ে লজ্জার দুঃখের বা অগণতান্ত্রিক আর কি হতে পারে! তাই আমার মত এক জন ক্ষুদ্র শিল্পের কাজেও পড়েছে তার ছায়া।”