বিপাশা চক্রবর্ত্তী। নিজস্ব চিত্র।
তিনি জীবিত হলেও সরকারি পোর্টালে ‘মৃত’। ফলে, প্রায় ১০ মাস ধরে রাজ্যের ‘মানবিক’ প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চন্দননগরের সরিষাপাড়া মজুমদারগড়ের বাসিন্দা, আজন্ম বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যুবতী বিপাশা চক্রবর্তী। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না বিপাশার মা-বাবা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এমনটা হয়ে থাকলে সমাধানের পথও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
সরকারি শংসাপত্রে বিপাশার প্রতিবন্ধকতার হার ১০০ শতাংশ। বাবা অরুণ ছিলেন কাপড়ের দোকানের কর্মী। অতিমারিতে কাজ খুইয়েছেন। মা কৃষ্ণা গৃহবধূ। কোনওমতে চেয়ে-চিন্তে সংসার চলে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে ২০২০ সালের মাঝামাঝি রাজ্যের 'মানবিক' প্রকল্পে মাসিক হাজার টাকা ভাতা পাওয়া শুরু হয় বিপাশার। কিন্তু গত বছর এপ্রিলের পর তা আর মেলেনি।
ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক দফতরে দৌড়ঝাঁপের পর জানা যায়, জাতীয় তথ্য কেন্দ্রের জন্ম-মৃত্যু পোর্টালে বিপাশাকে ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে।
কিন্তু এমনটা কী করে সম্ভব? অরুণের অভিযোগ, জেলাশাসকের দফতর থেকে ভাতা বন্ধ হওয়ার কারণ দর্শানোর কাগজ হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কোনও উত্তর মেলেনি।
বিপাশা কথা বলতে পারেন না। বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। হাত-পা কিছুই স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না। ২০০৮ সালে সরকারি ভাবে ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধতার শংসাপত্র মেলে। কিন্তু বাম আমলে 'মানবিক' প্রকল্প ছিল না। রাজ্যে পালাবদলের পরে ওই প্রকল্প চালু হলে বিপাশার মামা, চুঁচুড়ার ষষ্ঠীতলার বাসিন্দা অমল ভট্টাচার্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে বিপাশার নাম তাতে অন্তর্ভুক্ত করান। ভাতা মেলায় সামান্য হলেও ওই পরিবারের আর্থিক সমস্যা মিটছিল। কিন্তু সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারটি এখন বিপাকে।
অমল জানান, অরুণকে নিয়ে প্রথমে চন্দননগর মহকুমাশাসক দফতরে যান। সেখান থেকে চুঁচুড়ায় জেলাশাসক দফতরে থাকা সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করলে জানা যায় বিপাশা সরকারের খাতায় ‘মৃত’।