খানাকুলের রূপনারায়ণ নদের জগৎপুর থেকে পানশিউলি পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
খানাকুলের দিকে রূপনারায়ণ নদের বাঁধ নেই। ফলে সামান্য জলস্ফীতিতে নদ সংলগ্ন খানাকুল-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়। নদ উপচে যে পথে জল ঢোকে তার মধ্যে অন্যতম, জগৎপুর থেকে পানশিউলি পর্যন্তমোট সাড়ে ৩ কিলোমিটার অংশ চিহ্নিত করে বাঁধ নির্মাণে উদ্যোগী হল সেচ দফতর।
জেলা সেচ দফতরের এগ্জ়িকিউকিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন পাল বলেন, “আপাতত জগৎপুর থেকে পানসিউলি পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প রচনা করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিছু জমি অধিগ্রহণ করা-সহ খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। কাজটা হলে ব্লকএলাকা জলমগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।’’
তিনি জানান, রূপনারায়ণ নদের উল্টোদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে বাঁধ থাকলেও হুগলির খানাকুলে বাঁধ নেই। ফলে একটু জল বাড়লেই খানাকুলের দিকেই তা ঢুকে পড়ে। এই বাঁধ তৈরি ছাড়াও রূপনারায়ণ নদের সঙ্গে অরোরো খাল এবং চাঁদকুন্ডু খালের সংযোগ মুখে দুটি স্লুস গেট করার পরিকল্পনা নিয়ে মাটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এতে, একদিকে বন্যার জল যেমন ঢুকবে না, তেমনই বোরো চাষের সময় জল ঢুকিয়ে সেচ করা যাবে।
খানাকুল-২ ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার বাকি ৪টি ব্লকের তুলনায় খানাকুল-২ ভৌগোলিক ভাবে প্রায় ১০ ফুট নীচে। বৃষ্টির জমা জলে প্রতি বছরই বানভাসির চেহারা নেয় সেখানকার ১১টি পঞ্চায়েতএলাকা। তার উপর মহকুমারউপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকেশ্বর নদ, মুণ্ডেশ্বরী নদী এবং দামোদর নদের জল-সহ সমস্ত খাল-বিলের জল খানাকুল-২ ব্লক হয়েইমহকুমার দক্ষিণপ্রান্তে রূপনারায়ণনদে পড়ে। রূপনারায়ণের চাপে অনেক সময় সেই সব খালদিয়ে জল ঢুকেও বিধ্বস্ত করে ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা, জগৎপুর সহ খান পাঁচ পঞ্চায়েত এলাকা।
রূপনারায়ণে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা তাই আশার আলো ওই পঞ্চায়েতগুলির কাছে। ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ সানকি বলেন, “রূপনারায়ণে বাঁধ হলে এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সুফল মিলবে।” একই সুর জগৎপুরের পঞ্চায়েত প্রধান প্রভাস সাউ, মাড়োখানার উপপ্রধান শেখ আব্বাসের গলাতেও।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।