অনুশীলনে ব্যস্ত চুঁচুড়ার মৃত্তিকা। নিজস্ব চিত্র
প্রশিক্ষণ শুরু সাত বছরে। বর্তমানে বয়স পনেরো। এর মধ্যেই আট বারের বেশি জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে হুগলি জেলার চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার বাসিন্দা মৃত্তিকা মল্লিক। তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আসর থেকেও এসেছে সাফল্য।
ঘুটিয়াবাজার বিনোদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী এ বার জালন্ধরে অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করল। পয়লা থেকে ৯ মে পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা শেষ করে বৃহস্পতিবার ঘরে
ফিরেছে সে। এই সাফল্যে ভর করে আগামী নভেম্বরে ইটালিতে বিশ্ব যুব দাবা প্রতিযোগিতায় সুযোগ
করে নিয়েছে।মৃত্তিকার বাবা অরিন্দম মল্লিক কেবল ব্যবসায়ী। মা মীনাক্ষী গৃহবধূ। দুই মেয়ের মধ্যে ছোট মৃত্তিকা। ছোট থেকে সে পাড়ার কাকুদের তাস খেলা দেখত। বুদ্ধিদীপ্ত খেলার প্রতি আকর্ষণ বুঝে মেয়েকে দাবা
প্রশিক্ষণ শিবিরে ভর্তি করেন বাবা। বয়স দুই অঙ্কে পৌঁছনোর আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় স্তরে সুযোগ পাওয়া। তারপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই জাতীয় স্তরের একাধিক খেলায় যোগ দিয়েছে সে। তিন বার প্রথম। এশিয়া যুব দাবায় দু’বার যোগ দিয়েছে মৃত্তিকা। এক বার পেয়েছে রুপো। এক বার ব্রোঞ্জ। অনূর্ধ্ব-১৪ বিশ্ব যুব দাবায় চতুর্থ হয়েছিল সে।
পঞ্চদশী জানাচ্ছে, নভেম্বরে আরও কড়া চ্যালেঞ্জ। জালন্ধর থেকে ফিরেই সে মন দিয়েছে দাবার বোর্ডে। সামনের বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই, দু’দিক সামলানোর চাপও অনেক বেশি। তবে, আপাতত পড়াশোনা ঘণ্টা দুয়েকেই আটকে। কারণ, প্রায় ১৪ ঘণ্টা নতুন নতুন চাল খুঁজে বেড়ায় সে। ইটালিতে দেশের হয়ে কিস্তিমাত করাই এখন তার লক্ষ্য।
অরিন্দম বলেন, ‘‘মেয়ে আপাতত সপ্তাহে দু'দিন গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়ার কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্তরে লড়াইয়ের জন্য আরও প্রশিক্ষণ দরকার। দাবায় এই প্রশিক্ষণ ব্যয়বহুল।’’ তাঁর খেদ, অন্যান্য রাজ্যে দাবায় স্পনসর এলেও, পশ্চিমবঙ্গে মেলে না বললেই চলে। তাই, বহু বাঙালি প্রতিভাই মাঝপথে দাবা ছাড়েন।
শুক্রবার বাড়িতে এসে মৃত্তিকাকে শুভেচ্ছা জানান এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার, পুর প্রতিনিধি (কাউন্সিলর) গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়, নির্মল চক্রবর্তীরা। অরিন্দমের আবেদনে সাড়া দিয়ে স্পনসর খোঁজার প্রতিশ্রুতি দেন বিধায়ক।