তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য জনসভায় উস্কানি ও প্ররোচনামূলক বক্তব্য পেশ করেছেন বলে অভিযোগ তুলে মামলা করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেকের সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না-নিয়ে পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে। হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বুধবার সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন।
মামলাটি দায়ের করেছিলেন বিপ্লব চৌধুরী নামে বিরাটির এক বাসিন্দা। একটি রিট আবেদনে তিনি আর্জি জানান, জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও প্ররোচনামূলক বক্তব্য পেশের জন্য অভিষককে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হোক। একই সঙ্গে পুরো বিষয়টির তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়ার দাবিও তোলেন তিনি।
কী বলেছিলেন অভিষেক?
আবেদনকারীর আইনজীবী এ দিন আদালতে জানান, গত ২২ জুন বসিরহাটের একটি জনসমাবেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশ করেন ওই তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে বাংলার মানুষকে চোখ দেখালে চোখ ছিঁড়ে আমরা রাস্তায় ফেলে দিতে পারি। হাত দেখালে হাত কেটে দিতে পারি...’ ইত্যাদি। আইনজীবী জানান, ওই সাংসদের এই ধরনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর মক্কেল বিপ্লববাবু বসিরহাট থানায় অভিযোগ জানিয়ে পুলিশকে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন ২৫ জুন। পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগ গৃহীত হয় ৩০ জুন। ওই আইনজীবী এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, তৃণমূল সাংসদের ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদৌ কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, পুলিশ সেই বিষয়ে তাঁর মক্কেলকে কিছুই জানায়নি।
বিচারপতি দত্ত এ দিন রাজ্যের গভর্নমেন্ট প্লিডার বা জিপি-র কাছে জানতে চান, পুলিশ ওই ঘটনায় কী ব্যবস্থা নিয়েছে? জিপি জানান, মামলার আবেদনকারী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর আগেই ২৩, ২৪ এবং ২৫ জুন যথাক্রমে বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে ওই সাংসদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করে ইতিমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রিপোর্টও জমা দিয়েছে।
বিচারপতি দত্ত সব শুনে বিপ্লববাবুর আইনজীবীকে জানান, অভিযোগকারীর উচিত ছিল থানায় জানানোর পরে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো। সেখানে প্রতিকার না-পেলে আইনমাফিক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। তার পরেই মামলাটি খারিজ করে দেন বিচারপতি দত্ত।