ফাইল ছবি
পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের মামলায় সিবিআই তদন্তের বিরোধিতায় ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সে নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মামলার শুনানি গরমের ছুটির আগে শেষ হলেও, রায়দান স্থগিত ছিল। সোমবার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিচারপতির মান্থা যথাযথ রায় দিয়েছেন। তাতে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বোধ করছে না ডিভিশন বেঞ্চ।
১৩ মার্চ বিকেলে খুন হন তপন। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে। ‘সিট’ তপনের ভাইপো তথা পুরভোটে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী দীপক কান্দু, তাঁর বাবা নরেন কান্দু-সহ চার জনকে ধরে। কিন্তু পুলিশি তদন্তে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। ৪ এপ্রিল আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তভার পাওয়ার পরে, সিবিআই আরও এক জনকে ধরেছে।
ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, রাজ্য পুলিশ তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাঝে, বিচারপতি মান্থা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সে রায় ‘সঙ্গত’ কারণে দেওয়া হয়নি। যদিও পূর্ণিমার আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও দেবায়ন ঘোষ পুলিশি তদন্তে নানা গাফিলতির অভিযোগ তুলে ধরেন এবং পুলিশের হাতে তদন্তভার থাকাকালীন এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্তে নেমে অগ্রগতি করেছে। সব দিক খতিয়ে দেখে রাজ্যের আর্জি খারিজ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। পূর্ণিমার প্রতিক্রিয়া, ‘‘স্বামীর খুনের ষড়যন্ত্রের পিছনে যে সত্য রয়েছে, তা যাতে সামনে না আসে, সে জন্যই রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করেছে। আমি আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করছি, সুবিচার পাব।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘হাই কোর্টে সরকারি কোষাগারের টাকা খরচ করে তপন কান্দুর খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা সফল হল না! সরকারের কুৎসিত মানসিকতা বাংলার মানুষ দেখছেন। এই মানসিকতার নিন্দা করছি।’’ অধীরের দাবি, রাজ্য সরকার এই রায়ের বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে রাত পর্যন্ত তেমন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সরকারি সূত্রের দাবি। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার বক্তব্য, ‘‘হাই কোর্টের রায় নিয়ে মন্তব্য করব না। শুধু বলব, এই ঘটনায় সিট যাদের গ্রেফতার করেছিল, তার পরে সিবিআই আর মাত্র এক জনকে ধরেছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।