শোকার্ত: মর্গের সামনে অপেক্ষায় সলিল বসুর আত্মীয় পরিজন। মঙ্গলবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
সিপিএম কর্মী সলিল বসুর মৃতদেহের ময়না তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
নবান্ন অভিযানের দিন পুলিশের লাঠির আঘাতে সলিলবাবু আহত হয়েছিলেন বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। সেই আঘাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ থেকেই সলিলবাবুর মৃত্যু বলে বারবারই তাঁর পরিবার এবং সিপিএম দাবি করেছে। কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথা চোট পেয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এই চাপানউতোরে পড়ে সলিলবাবু পরিবার কলকাতা হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিল, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়না তদন্তের জন্য। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করায় তাকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম।
মামলার শুরুতেই সরকারি তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে বলেন, ওই মৃতদেহের ময়নাতদন্তের ব্যাপারে সরকারের তরফে কোনও আপত্তি নেই। তার পরে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি সলিলবাবুর মৃতদেহের ময়না তদন্তের নিদের্শ দিয়ে বলেন, পুরো প্রক্রিয়ার জন্য কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার এক জন আধিকারিককে দায়িত্ব দিতে হবে। ময়না তদন্তের জন্য এসএসকেএমের সুপারকে তিন সদস্যের চিকিৎসকের দল গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বাগচী। ময়না তদন্তের পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিওগ্রাফি করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও সলিল বসুর চিকিৎসার যাবতীয় রিপোর্ট আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন হাইকোর্টে পেশ করতে বলেছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: কেন জেরা নয় ম্যাথুকে, প্রশ্ন বিচারপতিরই
সলিলবাবুর পরিবারের তরফে আইনজীবী ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। রায়ের পরে বিকাশবাবুর বক্তব্য, ‘‘এই রায় বাঞ্ছনীয় ছিল। আঘাতটা কোথায় ও কীসের আঘাত, তা ময়না তদন্তে জানা যাবে।’’ কিন্তু ময়না তদন্তের এই দাবি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। ওই ব্যক্তির মৃত্যু যে পুলিশের লাঠির আঘাতে হয়নি, তা পুলিশ তো বলেইছে। তা সত্ত্বেও ময়নাতদন্তের এই দাবি দৈন্যের রাজনীতি।’’ তৃণমূলের এই মন্তব্য শুনে বিকাশবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল কেন এ সব বলছে? পুলিশের লাঠিতেই আঘাত কি না, ময়না তদন্তেই জানা যাবে।