West Bengal News

বাবুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের

বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে তদন্ত বা আইনি পদক্ষেপ আপাতত করতে পারবে না রাজ্য সরকার। আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য বাবুলের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হাইকোর্ট এ দিন তিরস্কার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ২৩:০১
Share:

আপাতত স্বস্তি। —ফাইল চিত্র।

বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে তদন্ত বা আইনি পদক্ষেপ আপাতত করতে পারবে না রাজ্য সরকার। আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য বাবুলের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হাইকোর্ট এ দিন তিরস্কার করেছে। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে কোনও মহিলার প্রতি বাবুল কী ভাবে কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন, সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট সেই প্রশ্ন তুলেছে। তবে আলিপুর থানায় দায়ের হওয়া মামলার প্রেক্ষিতে যে ভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দিয়েছিল আলিপুর আদালত, তা আপাতত কার্যকর করতে পারছে না রাজ্য প্রশাসন।

Advertisement

গত জানুয়ারি মাসে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের বিতর্ক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্রের উদ্দেশে বাবুল কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয় আলিপুর থানায়। বাবুলের বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানাও। পুলিশের দায়ের করা মামলা খারিজের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পাল্টা মামলা দায়ের করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর আদালতে। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি বাগচী মন্তব্য করেন, ‘‘এই ধরনের ভাষা প্রয়োগ মানহানিকর।’’ বাবুলের হয়ে সওয়াল করতে উঠে প্রবীণ আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ জানান, দিল্লিতে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের বিতর্ক সভার অনুষ্ঠানে তাঁর মক্কেল একটি মন্তব্য করেছেন। তার জন্য গুরুতর একটি ধারায় মামলা দায়ের হতে পারে না। বাবুলের কোনও অসদুদ্দেশ্য ছিল না বলেও প্রদীপ ঘোষ আদালতকে জানান। আইনজীবী প্রদীপবাবুর সওয়াল, মন্তব্য করা হল দিল্লিতে, এফআইআর হল কলকাতায়। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কলকাতায় মামলা দায়ের করার এক্তিয়ারই নেই পুলিশের।

তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র এ বার বাবুলের পাল্টা মামলার মুখে। —ফাইল চিত্র।

Advertisement

বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এক জন সাংসদ হিসেবে তিনি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কোনও মহিলার উদ্দেশে তিনি এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন না। তাঁর আচরণ দুঃখজনক।’’

বাবুলের আইনজীবীর সওয়াল শেষ হলে বিচারপতি বাগচী তাঁকে নির্দেশ দেন, এই মামলায় রাজ্য-সহ অন্য সব পক্ষকে যুক্ত করতে। একই সঙ্গে বিচারপতি বাগচী এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ছয় সপ্তাদের জন্য বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উপরে স্থগিতাদেশ জারি থাকবে।

এ দিন মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পরে বাবুলের অন্য আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশ যে ধারায় মামলা করেছে এবং নিম্ন আদালত যে ভাবে বাবুলকে ‘পলাতক’ অ্যাখ্যা দিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, তার বিরুদ্ধেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ তোলার জন্য মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে মানহানির মামলার নোটিস পাঠানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement