—ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আর বাধা নেই। তা সত্ত্বেও অন্তত ন’হাজার চাকরিপ্রার্থী নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। তাই দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সব জেলা স্কুল পরিদর্শক ও জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিলেন প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা।
মেধা-তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মার্চের প্রথম সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ডিভিশন বেঞ্চ সব খতিয়ে দেখে স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে নির্দেশ দেয়, চার সপ্তাহের মধ্যে সব জেলার শিক্ষা দফতরে সম্পূর্ণ মেধা-তালিকা টাঙিয়ে দিতে হবে এবং শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মেধা-তালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু এর মধ্যে বিধানসভার ভোট চলে আসায় পুরো বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধির আওতায় এসে যায়। শিক্ষা পর্ষদ তাই এত দিন নিয়োগ চালু করেনি।
শান্তনু দে নামে পূর্ব মেদিনীপুরের এক চাকরিপ্রার্থী জানান, হাই কোর্টের স্থগিতাদেশের আগে একই মেধা-তালিকাভুক্ত অন্তত তিন হাজার প্রার্থী নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে স্কুলে যোগ দিয়েছেন। তিন মাসের বেতনও পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। শুভেন্দু সাঁতরা, নাড়ুগোপাল দাস নামে দুই প্রার্থীর প্রশ্ন, একই মেধা-তালিকায় থাকা অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পৃথক ফল হবে কেন? ভোট পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ায় দ্রুত নিয়োগের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
অন্য দিকে, উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকপদ প্রার্থীরা জানাচ্ছেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গত ১০ মে আপার প্রাইমারি ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু এখনও ওয়েবসাইটে সেই তালিকার দেখা নেই। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও তালিকা না-পাওয়ায় চাকরিপ্রার্থীরা চূড়ান্ত হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নথি যাচাই প্রক্রিয়ার সময়সীমা (৪ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল) শেষ হয়েছে। ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করার কথা ১০ মে-র মধ্যে। তার আট সপ্তাহের মধ্যে মেধা-তালিকা প্রকাশের নির্দেশ আছে। পুরো প্রক্রিয়া ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে বলা হয়েছে।
চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠন আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চের সদস্যা অর্পিতা প্রামাণিক বলেন, ‘‘করোনা আবহে অফলাইনে ইন্টারভিউ নেওয়া কঠিনই। কিন্তু ওয়েবসাইটে ইন্টারভিউয়ের তালিকা দিলে তো করোনাজনিত কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তা হলে তা প্রকাশ করা হল না কেন?’’ পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, “আমরা স্কুল সার্ভিস কমিশনে (এসএসসি) মেল করে বিষয়টি জানিয়েছি। আদালতের নির্দেশ এবং বর্ধিত শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণে ই-মেল পাঠানো হয়েছে নতুন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে।”