Sagar Mela

সাগরমেলা নিয়ে কী ভাবছে রাজ্য, প্রশ্ন হাইকোর্টের

প্রধান বিচারপতি জানান, জরুরি ভিত্তিতে আজ, বৃহস্পতিবার আবার এই মামলার শুনানি হবে। শুনানির তালিকায় মামলাটি সর্বাগ্রে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:০৭
Share:

অস্থায়ী ছাউনি তৈরির জন্য হোগলা পাতা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাগরের তীরে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

অতিমারির আবহে ছোট আকারে সাগরমেলা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এ দিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে জানান, তিনি রাজ্য সরকারের মতামত পেশ করবেন।

Advertisement

প্রধান বিচারপতি জানান, জরুরি ভিত্তিতে আজ, বৃহস্পতিবার আবার এই মামলার শুনানি হবে। শুনানির তালিকায় মামলাটি সর্বাগ্রে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

দুর্গা-কালী-ছটপুজো নিয়ে জনস্বার্থ মামলা যিনি করেছিলেন, সাগরমেলা নিয়ে সেই অজয়কুমার দে-ই আদালতের দ্বারস্থ। আবেদনে বলা হয়, মকরসংক্রান্তিতে সাগরসঙ্গম হল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসমাগমের স্থান। দেশের নানা প্রান্তের সাধুসন্ন্যাসী ও পুণ্যার্থীরা আসেন। সাগরদ্বীপ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জনজোয়ারে ভেসে যায়। করোনা-কালে সব জনসমাগম নিষিদ্ধ। সাধুসমাগমের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হবে কেন, প্রশ্ন অজয়বাবুর।

Advertisement

গত প্রায় দেড় দশকে গঙ্গাসাগরে জনসমাগম কী হারে বেড়েছে, সেই তথ্যও মামলার আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। আশঙ্কা, এ বার সেই সমাগমের অনুমতি দিলে কোভিড সংক্রমণ হুহু করে বাড়তে পারে। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থেই এ বছর বাইরের পুণ্যার্থীদের সাগরদ্বীপে যাওয়া নিষিদ্ধ করার আর্জি জানানো হয়েছে। মেলা শুরুর আগে বাবুঘাটের জমায়েতে হাজারো বিধি আরোপ করলেও দূরত্ব-বিধি পালন অসম্ভব বলে মনে করেন অজয়বাবু। তাই সেখানেও জমায়েত নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী সোমবার মেলা ছোট আকারে করার কথা জানিয়েছিলেন। সরকার জানায়, অন্যান্য বার ৫০ লক্ষ পুণ্যার্থী আসেন। এ বছর ৩০ লক্ষ লোক আসতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, লোকে যেন মেলায় না-যান। কিন্তু পুণ্যার্থীদের আটকানোর কথা বলেননি তিনি। তবে মেলা ঘিরে কোভিড পরীক্ষা শিবির, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থার কথা বলছে সরকার। এমনকি, ই-স্নান এবং ই-দর্শনের কথাও বলা হয়েছে।

মাস্ক ছাড়া মেলায় প্রবেশ বা থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে এ দিন আলিপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন। কোভিড আবহে সাগরমেলা নিয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে। তাতে যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন দফতরকে। চিকিৎসক, নার্স তো থাকছেনই। তীর্থযাত্রীদের জন্য বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, আট নম্বর লট, নামখানা-সহ ১৩টি প্রবেশপথে থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি থাকছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থাও।

স্বাস্থ্যকর্মীরা আউট্রাম ঘাট, সাগর ও নামখানায় চিকিৎসা শিবিরে থাকবেন। সেখান থেকে তীর্থযাত্রীদের মধ্যে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার বিতরণ করা হবে। যে-সব পুণ্যার্থীর জ্বর, সর্দিকাশি-সহ করোনার উপসর্গ থাকবে, তাঁদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং আরটিপিসিআর টেস্ট (লালারস) হবে। লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হবে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ, কাকদ্বীপ, রুদ্রনগর, এমআর বাঙুর-সহ পাঁচটি হাসপাতালে। ড্রোন ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মেলাপ্রাঙ্গণে নজরদারি চলবে। আটটি সেফ হোম প্রস্তুত রাখা হয়েছে তীর্থযাত্রীদের জন্য। যেখানে অন্তত ৭০০ রোগীকে রাখা সম্ভব।

ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, বাঙুর-সহ সাতটি হাসপাতালকে পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অসুস্থ পুণ্যার্থীদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স, ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স, হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা থাকছে। কোনও তীর্থযাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে দাহকাজের ব্যবস্থা করবে প্রশাসনই। সেই জন্য অস্থায়ী চুল্লি তৈরি করা হয়েছে। সাগরমেলা নিয়ে এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন সুন্দরবনের পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারিও। তিনি জানান, বাড়তি নজরদারির জন্য ১০ হাজার পুলিশ থাকছে মেলায়। থাকবে ৪০০ সিসি ক্যামেরা, ২০টি ড্রোন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement