পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের উর্দি পরে আসা তিনটি লোক আনিসকে মারতে মারতে ছাদে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। এই মামলায় পুলিশকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে আনিসের পরিবার।
ছাত্রনেতা আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে পূর্ণাঙ্গ এবং সবিস্তার আবেদনপত্র মঙ্গলবার জমা পড়েছে। আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী সোমবারেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে বিষয়টি উত্থাপন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁকে পূর্ণাঙ্গ আবেদনপত্র পেশ করতে বলেছিল কোর্ট। এ দিন কৌস্তুভবাবু জানান, তিনি মামলার কাগজ জমা দিয়েছেন। আজ, বুধবার শুনানি হবে।
আমতার বাসিন্দা, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিসের নিজের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের উর্দি পরে আসা তিনটি লোক আনিসকে মারতে মারতে ছাদে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। এই মামলায় পুলিশকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে আনিসের পরিবার। হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশ প্রথম থেকে বিষয়টিকে কার্যত আড়াল করার চেষ্টা করলেও ঘটনাটিকে ঘিরে আলোড়ন তৈরি হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এডিজি (সিআইডি) জ্ঞানবন্ত সিংহের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তৈরি করে দিয়েছেন। আনিসের পরিবারের দাবি, সিবিআই-কে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে। মামলাকারীদের আবেদন, হাই কোর্ট ওই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিক।
আইনজীবী মহলের অনুমান, সরকার পক্ষ আজ, বুধবার কোর্টে নিজেদের পক্ষে যুক্তি দিতে সিট-কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তবে অনেকের মতে, অতীতে রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যু নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল এবং সেখানে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে জ্ঞানবন্ত সিংহের নাম জড়ায়। এ-হেন পুলিশকর্তাকে আনিস-কাণ্ডের তদন্তভার দেওয়া হল কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সেই প্রশ্ন আদালতেও তোলা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জ্ঞানবন্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী সোমবার যা বলেছেন, তার মধ্যে তদন্তের আগেই কার্যত তদন্তের উপসংহারের ইঙ্গিত রয়েছে। সে-ক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশের হাতে তদন্তভার দেওয়া যুক্তিযুক্ত কি না, সেই প্রশ্ন আদালতে উঠতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ।