সতর্কতা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা। ভারত-বাংলাদেশ ফুলবাড়ি সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে কর্মীরা ব্যবহার করছেন মাস্ক ও গ্লাভস। নিজস্ব চিত্র
চিন-ফেরত দুই ভারতীয় নাগরিককে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে বলে কলকাতা পুরসভাকে জানিয়ে দিল স্বাস্থ্য ভবন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই দু’জনের মধ্যে নোভেল করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষণ নেই। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পর্যবেক্ষণে রাখতে বলা হয়েছে।’’ চিনের ভাইরাস নিয়ে বঙ্গবাসী যাতে আতঙ্কিত না-হন, সেই জন্য হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
১৫ জানুয়ারির পরে চিনের উহান থেকে কেউ এ রাজ্যে এলে তাঁর লালার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। চিনের অন্য প্রদেশ থেকে কেউ এলে আগমনের দিন থেকে ২৮ দিন তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখার কথা। সেই হিসেবে দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা দুই ভারতীয়কে পর্যবেক্ষণে রাখতে বলা হয়েছে পুরসভাকে।
তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে স্বাস্থ্য ভবনও। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, ওই দু’জন কর্মসূত্রে চিনে ছিলেন। ‘নোভেল করোনাভাইরাস’ সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নেওয়ায় ২৬ জানুয়ারি তাঁরা ফিরে আসেন। ‘‘ওঁরা সুস্থ আছেন। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই,’’ বলেন স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা।
করোনার বিপদ সম্পর্কে রাজ্যবাসী যাতে সচেতন হন, সেই লক্ষ্যে রাজ্য সরকার সর্বক্ষণের জন্য হেল্পলাইন চালু করেছে। তার দু’টি নম্বর হল ০৩৩-২৩৪১২৬০০ এবং ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২। করোনা নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকলে সংশ্লিষ্ট নম্বরে ফোন করলেই সাহায্য মিলবে।
এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, এ রাজ্যের অনেকে কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার জন্য চিনে আছেন। তাঁদের কথা ভেবে আত্মীয়েরা আতঙ্কিত হয়ে পড়তে পারেন। তা যাতে না-হয়, সেই জন্য হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হেল্পলাইন নম্বরে চিকিৎসকেরাও থাকবেন। ওই রোগ সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন থাকলে তার উত্তর দেওয়া হবে।’’
করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হলদিয়া বন্দরের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে এ দিন বৈঠক করেন কর্তৃপক্ষ। বিদেশি জাহাজ ও বন্দরের কর্মীদের শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য বিশেষ দল গড়া হয়েছে। বাংলার সার্বিক পরিস্থিতি যাচাইয়ে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। এ রাজ্যে হেল্পলাইন নম্বর চালু হয়েছে জেনে তার প্রশংসা করেছে দিল্লি।
এ দিন স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, আগামী দিনে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি বা এনআইভি-তে আর নমুনা পাঠানোর প্রয়োজন না-ও হতে পারে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজ়িজ়েস নাইসেড-কে ‘নোডাল সেন্টার’ করা হয়েছে।