ভাইরাসের আতঙ্কে স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে যাত্রীদের, কলকাতা বিমানবন্দরে।—ছবি এএফপি।
ভারতে এখনও পর্যন্ত এক জনের শরীরেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কেরলের সেই তরুণ চিনের উহানে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়ছিলেন। ২৩ জানুয়ারি চিনের কুনমিং থেকে কলকাতা দিয়ে বিমানে তিনি দেশে ফেরেন বলে স্বাস্থ্য ভবনের খবর। ওই বিমানের আরও ৫০ জন যাত্রীর ‘স্ক্রিনিং’ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জন বাংলার বাসিন্দা। বাকিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন।
স্বাস্থ্য ভবনের খবর, বঙ্গের ওই ছয় বাসিন্দা-সহ সংশ্লিষ্ট ৫০ জন যাত্রীকে খুঁজে বার করা খুবই কঠিন। উড়ান সংস্থার কাছে দেওয়া তাঁদের অনেকেরই ঠিকানা যথাযথ নয়, ফোন নম্বরেও গরমিল আছে। তবু তাঁদের খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে। প্রশ্ন উঠছে, ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এলেও বিমানবন্দরে তা ধরা পড়ল না কেন? তা হলে কি বিমানবন্দরে ফাঁক আছে? সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কেরলের ২০ জনের একটি দলের সদস্য ছিলেন ওই ডাক্তারি পড়ুয়া। তাঁরা যে উহান থেকে এসেছেন, সেটাও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় তাঁর শরীরে সংক্রমণের লক্ষণ ধরা পড়েনি।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের ওই ছয় বিমানযাত্রীর খোঁজ চলছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে বা তাতে আক্রান্ত সন্দেহে কেউ শুক্রবার রাত পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হননি।’’
আরও পড়ুন: উহানের পথে পড়ে দেহ, মৃত বেড়ে ২১৩
বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৫ জানুয়ারির পরে চিন থেকে আগত সকলের নোভেল করোনা ভাইরাস (এনসিওভি) পরীক্ষা করানো হবে। এর পাশাপাশি উহান থেকে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও তাঁদের ১৪ দিন ‘হোম আইসোলেশনে’ রাখার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয়দের ফেরাতে চিনে বিশেষ বিমান
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, করোনা সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তাতে স্থির হয়েছে, এনসিওভি-র লক্ষণ এবং রোগের মোকাবিলায় কী ধরনের সতর্কতা মেনে চলতে হবে, সেই বিষয়ে নেপালের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলির পঞ্চায়েতকে সচেতন করতে হবে। এনসিওভি-র নিরিখে স্পর্শকাতর পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে নজরদারির জন্য চেকপোস্ট গড়তে বলা হয়েছে। স্থানীয় ভাষায় পর্যাপ্ত প্রচারপত্র বিলি, ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানোর উপরে জোর দিতে হবে। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, এ-পর্যন্ত দেশের ২১টি বিমানবন্দরে ২৩৪টি বিমানে করোনা নিয়ে নজরদারি চালানো হয়েছে। ‘স্ক্রিনিং’ হয়েছে মোট ৪৩৩৪৬ জন যাত্রীর। পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি বা এনআইভি-তে ৪৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৮টি নেগেটিভ। এনআইভি-র পাশাপাশি কলকাতার নাইসেড-সহ সারা দেশে আরও ১২টি জায়গায় নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে।