ইন্টার্ন মৌমিতা দাসকে অবিলম্বে সতর্ক করা হোক। এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য ভবন। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের অসহযোগিতায় পরিষেবা বজায় রাখতে নানা সমস্যা হচ্ছে। তার ওপরে এই ধরনের ‘অবাধ্যতা’ প্রশ্রয় পেলে ভুল বার্তা যাবে। কিন্তু, এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ এত দিন ধরে বার বার অভিযোগ পেলেও মৌমিতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি কেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বিধায়ক নির্মল মাজিকে নিজের ‘জেঠু’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে এসএসকেএমে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মৌমিতা দাস। প্রায় সমস্ত বিভাগের প্রধানরাই এই অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, মৌমিতা ডিউটি করেন না। কাজ করতে বললেই হুমকি দেন ‘জেঠু’কে বলে অন্যত্র বদলি করিয়ে দেওয়ার। গোটা এসএসকেএমই কার্যত তেতে রয়েছে এই ইন্টার্নের ‘দিদিগিরি’র জেরে। এ দিন আনন্দবাজারে খবরটি প্রকাশিত হওয়ায় কিছুটা নড়েচড়ে বসেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। মৌমিতা দাসকে সতর্ক করার নির্দেশ পৌঁছয় এসএসকেএমে। তবে এই তৎপরতা অদূর ভবিষ্যতে বহাল থাকবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান চিকিৎসক মহল। এক প্রবীণ চিকিৎসকের অভিযোগ, ‘‘এ দিন সকাল থেকেই ফোন করে বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের শাসানো হয়েছে। কী ভাবে সংবাদ মাধ্যমের কাছে খবর গেল, তার কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।’’ কে শাসিয়েছেন? ওই চিকিৎসকের জবাব, ‘‘সেটা তো কারওরই না বোঝার কথা নয়।’’
এসএসকেএমের অধিকর্তা মঞ্জুদেবী এ দিন বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। তবে ‘জেঠু’ নির্মল মাজি বলেন, ‘‘নিজেকে না শোধরালে মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন পাবেন না মৌমিতা। মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে আমি এই ঘোষণা করছি।’’ নির্মল এ দিনও দাবি করেন যে তিনি মৌমিতাকে চেনেন না।
এসএসকেএমের এমবিবিএস হস্টেল কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, এ দিন তাঁরাও মৌমিতার বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁদের বক্তব্য, এমবিবিএস-এ ভর্তির পর থেকেই হাসপাতালে তৃণমূল ছাত্র সংগঠের নেত্রী হয়ে ওঠেন মৌমিতা। হস্টেলের আবাসিকদের নানাভাবে ভয় দেখাতেন তিনি। কথা না শুনলে এসএসকেএম থেকে তাড়ানোর ভয়ও দেখিয়েছেন একাধিকবার। তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেও নাকি লাভ হয়নি।
এ দিন মৌমিতার সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও।