অধীর চৌধুরী এবং সোমেন মিত্র— ফাইল চিত্র।
দু’জনের রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রায় তিন দশকের। বৃহস্পতিবার তাঁর ‘রাজনৈতিক অভিভাবক’ সোমেন মিত্রের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর চোখে জল চলে এল। বহরমপুরের সাংসদ জানান, সোমেনের হাত ধরেই তাঁর রাজনৈতিক যাত্রার সূচনা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কংগ্রেস রাজনীতিতে এসেছিলাম সেটা শুধুমাত্র সোমেন মিত্রের হাত ধরেই। তিনি সুযোগ দিয়েছিলেন বলেই কখনও আমি বিধায়ক হয়েছি, কখনও সাংসদ হয়েছি। আজ আমার যে রাজনৈতিক পরিচিতি তার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান সোমেন মিত্রের। এ কথা আজ নয়, বার বার আমি খোলা মঞ্চে বলেছি।’’
ধরা গলায় অধীরের জানান, আগে একাধিকবার অসুস্থ হয়েও জীবনসংগ্রামে জয়ী হয়েছিলেন তাঁর ‘রাজনৈতিক অভিভাবক এবং শুভানুধ্যায়ী’। দীর্ঘদিন এমসে (অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস) চিকিৎসাধীন থেকেও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ বারেও তিনি তেমনটাই আশা করেছিলেন। কিন্তু সেই আশা পূরণ হল না। অধীরের কথায়, শুধু রাজনীতি নয় সোমেনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল আবেগের। তিনি বলেন, ‘‘সোমেন মিত্রের মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের একটা অধ্যায় শেষ হল। এই অপূরণীয় ক্ষতি কী ভাবে আমরা সামাল দিতে পারব জানি না।’’
সোমেনের উদ্যোগে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে ১৯৯১ সালের বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন অধীর। সে বার হাজার দু’য়েক ভোটে তিনি হেরে যান। ১৯৯৬ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন ফের ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিলেন অধীরকে। তৎকালীন রাজ্য যুব কংগ্রেস সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের একাংশ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু সেবার প্রায় ২০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন অধীর।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস রাজনীতিতে এক অধ্যায়ের অবসান, প্রয়াত সোমেন মিত্র
১৯৯৯ সালের লোকসভা ভোটেও সোমেনের ‘তৎপরতা’তেই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিট পেয়েছিলেন অধীর চৌধুরী। ১৯৯৮ সালের ভোটে ওই লোকসভা কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। কিন্তু অধীর প্রমাণ করেছিলেন সোমেনের ‘মনোনয়ন’ ভুল হয়নি। যদিও পরবর্তী সময়ে রাজনীতির চোরাস্রোতে কিছুটা দূরত্ব তৈরী হয়েছিল সোমেন ও অধীরের।
আরও পড়ুন: কংক্রিটের বাঙ্কারও গুঁড়িয়ে দেবে রাফালের 'হাতুড়ি'