হরকাবাহাদুর ছেত্রী।
স্কোয়াশ, কচু ছাড়া আর সবই বাড়ন্ত। যেখানে যে টুকু আনাজ মিলিছে তাও চড়া দামে। এমনই অভিযোগ কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী। খাদ্য সঙ্কট এড়াতে প্রশাসনের তরফে ‘কড়া’ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি দাবি করেছেন। বন্ধ সমর্থকদের ভয়ে রেশন ডিলাররা দোকান খুলতে চাইছে না এই যুক্তিও মানেন না তিনি। তাঁর পাল্টা দাবি রেশন ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করলেই দোকানগুলি খুলতে শুরু করবে বলে অভিমত তাঁর।
জেলা প্রশাসনের দাবি, পাহাড়ে খাদ্য সঙ্কট নেই। রেশন দোকান খুলতেও কড়া পদক্ষেপ হয়েছে বলে দাবি করেছেন দার্জিলিঙের জেলাশসাক জয়সী দাশগুপ্ত। জেলাশাসক বলেন, ‘‘খাদ্য সামগ্রী-আনাজ জোগাড় করে পাহাড়ে বিলি করতে দেখা যাচ্ছে। খাদ্য সঙ্কটের কোনও খবর নেই। রেশন ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল করতে ইতিমধ্যেই চকবাজারে নোটিশ টাঙানো হয়েছে।’’
৩৮ দিন ধরে লাগাতার বনধ চলছে পাহাড়ে। রেশন দোকানগুলি বন্ধ তারও আগে থেকে। বনধ উপেক্ষা করে আনাজ নিয়ে ট্রাক রওনা দিলে পাহড়ে ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ। যার জেরে খাদ্য সঙ্কট শুরু হয়েছে পাহাড়ে। খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আসার জন্য পাহাড়ের বনধ সমর্থকরা ‘পাস’ চালু করেছে। তাতেও কালোবাজারি চলছে বলে অভিযোগ। এ দিন হরকাবাহাদুরও সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অনেকে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চড়া দামে আনাজ বিক্রি করছে। যার মাশুল দিতে হচ্ছে পাহাড়ের মধ্য এবং নিম্নবিত্তদের। প্রশাসন কড়া হলে এমনটা হতো না।’’ একই দিনে পাহাড়ের খাদ্য সঙ্কট নিয়ে প্রশাসনকে বিধেঁছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি। তাদের প্রশ্ন, পাহাড়ে যদি সেনা-পুলিশ বাহিনী পৌঁছতে পারে তবে প্রশাসন কেন রেশন সামগ্রী পৌঁছতে পারছে না।
খাদ্য এবং তথ্য, এই দুই মৌলিক অধিকার দাবি করে হরকাবাহাদুর দাবি করেন দু’ক্ষেত্রেই পাহাড়বাসী বঞ্চিত হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় পাহাড়ের পড়ুয়ারা-সহ বহু চাকরির পরীক্ষায় আবেদনকারী কর্মপ্রার্থীরাও বঞ্চিত হচ্ছে বলে দাবি হরকাবাহাদুরেরর। পাহাড়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে দাবি করেছেন হরকাবাহাদুর। তাঁর কথায়, ‘‘খাদ্য নেই, বর্হিবিশ্ব সম্পর্কে কোনও তথ্য জানার সুযোগ নেই। পাহাড়বাসীর মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে।’’
প্রশাসনের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে পাহাড়ে। সে কারণেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘বন্ধ তুলে নেওয়াই তো সবচেয়ে সহজ সমাধান। তাতেই পাহাড়বাসীর মুখে হাসি ফিরে আসবে।’’