ফাইল চিত্র।
অসমে অশান্তির জেরে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের একটি বড় অংশে ট্রেন পরিষেবা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হতে শুরু করেছে। গুয়াহাটি এবং কামাখ্যা থেকে কোনওরকমে যে ক’টি মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেন এনেজপি হয়ে দিল্লি-কলকাতার দিকে চলাচল করছে, সেগুলি কম করে আড়াই থেকে ৭ ঘণ্টার উপরও দেরিতে চলছে। ফলে এই পরিস্থিতিতে বিপদে পড়েছেন প্রচুর যাত্রী। শিলিগুড়ি এবং এনজেপি জংশনে প্রচুর যাত্রী তাঁদের ট্রেনের টিকিটও বাতিল করানোর জন্য দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, অসমের ভিতরে এবং অসম থেকে শিলিগুড়িগামী লোকাল এবং ইন্টারসিটি ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেশ কিছু মেল ও এক্সপ্রেস গন্তব্যের দূরত্ব কমিয়ে চলাচল করবে। আটটি দূরপাল্লার ট্রেন সূচি বদল করে, গন্তব্য কমিয়ে চালানো হবে বলে জানায় রেল।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে দাবি, এত দিন পর্যন্ত গুয়াহাটি থেকে দিল্লি বা কলকাতার দিকে বেশ কিছু ট্রেন চলাচল করানো সম্ভব হচ্ছিল। তবে বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎই গুয়াহাটির পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়ায় অবধ অসম ট্রেনটি বাতিল করা হয় এনজেপিতেই। অনেক যাত্রীই রাতে এনজেপি এসে বিপদে পড়েন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই স্টেশনে বিহারের বাসিন্দা শিবশঙ্কর ঝা বলেন, ‘‘অবধ অসমে গুয়াহাটি পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল জরুরি কাজে। কিন্তু স্ত্রী-বাচ্চা নিয়ে এসে এনজেপিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর জানতে পারলাম ট্রেনটি বাতিল।’’ সারারাত স্টেশনেই অপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার দিনের বেলা তাঁরা বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ শুরু করেন। চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় ট্রেনটি এখনও গুয়াহাটি থেকেই যাতায়াত করছে। কিন্তু তা এনজেপি এবং নিউ আলিপুরদুয়ারে দীর্ঘ সময় আটকে ছিল বলে অভিযোগ।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, হাওড়া-ডিব্রুগড় কামরূপ এক্সপ্রেস ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং ডিব্রুগড়-হাওড়া ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল হয়েছে। আগরতলা-শিয়ালদা কাঞ্চনজঙ্ঘা ১৫ ডিসেম্বর, শিয়ালদা-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং শিলচর-শিয়ালদা কাঞ্চনজঙ্ঘা ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল রয়েছে। আলিপুরদুয়ার এবং গুয়াহাটির মধ্যে ট্রেন চলাচল ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে। এদিন গুয়াহাটি থেকে আসা ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস প্রায় ন’ঘণ্টা দেরিতে চলেছে। দেরিতে চলছে অন্য দূরপাল্লার মেল ট্রেনগুলিও। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘সারা দিন অশান্তির পরিস্থিতির উপর নজর রেখেই ট্রেন চালাতে হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই দূরপাল্লার ট্রেনগুলি দেরিতে চলাচল করছে। এদিনও আমাদের ৪০টি লোকাল এবং ইন্টারসিটি বাতিল রাখতে হয়েছে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।’’ রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, কামাখ্যা এবং গুয়াহাটিতে সেনা এবং আধা সেনার সাহায্য নিয়েই যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে তবেই ট্রেনগুলি রওনা করানো হচ্ছে। কামাখ্যা এবং গুয়াহাটিগামী ট্রেনগুলির ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে হয় বাতিল করতে হচ্ছে না হলে নির্ধারিত সময় থেকে অনেক দেরি করে ঢোকানো হচ্ছে ওই দু’টি স্টেশনে।