—ফাইল চিত্র।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় ‘বঙ্গশ্রী’-কে রুগ্ণ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করায় অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কারুশিল্প সমবায় সমিতি বা বঙ্গশ্রীর পরিচালকদের দাবি, সংস্থা লাভে চলছে। তার পরেও সরকার এটিকে গুটিয়ে ফেলতে চাইছে। এই নিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের শীর্ষ স্তরে প্রতিবাদও জানিয়েছেন বঙ্গশ্রীর পরিচালকেরা।
ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের ভাবনায় নানান বিষয় রয়েছে। এই নিয়ে শিল্প বিষয়ক মন্ত্রিগোষ্ঠী বা মন্ত্রিসভা যে-সিদ্ধান্ত নেবে, দফতর তা অনুসরণ করবে।’’ কর্তাদের এই আশ্বাসে অবশ্য খুশি নন বঙ্গশ্রীর কর্তারা। তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-হয়ে থাকে, তা হলে সংস্থাকে টেন্ডারে যোগ দিতে নিষেধ করা হয়েছে কেন? বিভিন্ন সরকারি দফতরের দরপত্রে যোগ দিয়েই তো লাভ করে বঙ্গশ্রী। সরকার যদি তাতেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তা হলে দু’-এক বছরের মধ্যেই সংস্থাটি লোকসানে পৌঁছে যাবে।
সরকার বঙ্গশ্রীকে রুগ্ণ ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু করায় কারুশিল্প সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে জনস্বার্থে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে বঙ্গশ্রী নিট লাভ করেছে তিন কোটি ৫২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৯০৪ টাকা। পুঞ্জীভূত লাভের পরিমাণ ১২ কোটি ৭৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭২৫ টাকা। কিন্তু এর পরেও কোনও কোনও মহল থেকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।
বঙ্গশ্রী নিয়ে বিবাদবিতর্ক কেন?
ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের দাবি, বেশ কয়েকটি সমবায় এবং সংস্থাকে গুটিয়ে ফেলার অথবা অন্য সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে নবান্ন। দফতরের পুনর্গঠন কর্মসূচিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রেশম শিল্পী সমবায় মহাসঙ্ঘ এবং রাজ্য কারুশিল্প সমবায় সমিতি (বঙ্গশ্রী)’-কে একসঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি চর্মজ, তন্ত্রশ্রী এবং বঙ্গশ্রীকে রুগ্ণ ঘোষণা করে সরকারি বরাত দিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বঙ্গশ্রীর দাবি, রাজ্যের প্রায় পাঁচ হাজার কারুশিল্পী ও তাঁদের পরিবার ওই সংস্থার ব্যবসার বহরের উপরে নির্ভরশীল। তাঁদের তৈরি পণ্য কিনেই সচল রয়েছে বঙ্গশ্রী। তা বন্ধ হয়ে গেলে পাঁচ হাজার পরিবারের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়বে। লাভে চলা সমবায় সংস্থাকে কেন গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বঙ্গশ্রীর কর্মী ও শিল্পীরা। সরকার অবশ্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে কিছু বলতে রাজি নয়।