১৯৬৫ সালের পর ফের হলদিবাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হতে চলেছে। ইতিমধ্যে হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত রেল লাইন পাতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দেশ এসেছে।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীল বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেলমন্ত্রকের কাছ থেকে নির্দেশ আসার পরেই হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন পাতার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
রেল দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, একসময় হলদিবাড়ির সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ছিল। ১৯৬৫ সালে ভারত এবং তৎকালীন পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পর রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ বার কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর হলদিবাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দু’দেশের পররাস্ট্র দফতর এই রেললাইন চালু করা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে। অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে পুরনো রেলপথ আবার নতুন করে তৈরি করে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে রেলপথে বাংলাদেশ সীমান্ত তিন কিলোমিটার। ওপাশে বাংলাদেশের স্টেশন চিলাহাটি। এপারে হলদিবাড়ির মত ওপারেও চিলাহাটি পর্যন্ত ট্রেন আসে। মাঝের অংশটুকু শুধু এতদিন বন্ধ ছিল।
হলদিবাড়ি থেকে সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথের উঁচু অংশটা থাকলেও লাইন নেই। সেই জায়গাও এখন বেদখল হয়ে গেছে। হলদিবাড়ি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলের জমির ওপর দোকানপাট বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে হলদিবাড়ি শহরে রেলের জমি দখল করে যারা বসবাস করছেন তাদের অবিলম্বে সরে যেতে বলা হয়েছে। নোটিস দেওয়া হয়েছে এবং মাইক নিয়েও প্রচার চালানো হচ্ছে।
নতুন রেলপথ চালুর জন্য যা যা দরকার তা নিয়ে রেলের পক্ষে একটা সমীক্ষাও করা হয়েছে। রেলবোর্ডের কাছে হলদিবাড়ি স্টেশন সংলগ্ন এলাকার পরিকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে একটা পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে হলদিবাড়ি স্টেশনটি বড় করা দরকার। বাংলাদেশের ট্রেন এসে দাঁড়ানোর জন্য বড় মাপের একটা আলাদা প্ল্যাটফর্ম করা দরকার। এছাড়াও বেশ কয়েকটি অফিস তৈরি হবে। পিট লাইনেরও উন্নতি করা হবে। রেলবোর্ড থেকে এই প্রস্তাবগুলির অনুমোদন আসলেই দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরুর কথা জানা গিয়েছে।
তবে হলদিবাড়ি দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে, না মালগাড়ি চলবে সে বিষয়ে এখনও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা কিছু জানাতে পারেননি। আপাতত রেলের জমি দখলমুক্ত করে পরিকাঠামোর উন্নয়নই মুখ্য। রেল দফতরের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, রেলবোর্ডের কাছ থেকে প্রস্তাবগুলির অনুমোদন আসলে আর দেরি করা যাবে না। কারণ বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং আন্তর্জাতিক। অনুমোদন আসার পর দ্রুত কাজ শেষ করে ফেলা হবে।