ব্যবসায়ী খুনে ধৃত অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র।
ডানকুনির জোড়া খুনের ঘটনায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গাইডদের পেশায়। জেলা থেকে কলকাতায় আসা পণ্যবাহী গাড়িগুলিকে পথ চেনানোর কাজ করেন এই গাইডরা। ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছে এই গাইডদের আস্তানা। এই কাজ করেই দুশো থেকে আড়াইশো জন গাইডের পেট চলে। কিন্তু ইলামবাজারের ব্যবসায়ী এবং তাঁর গাড়িচালক খুনের পর থেকেই গাইডদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ফলে গাইডদের অনেকেই তাঁদের রুটি-রুজির ক্ষেত্রে আশঙ্কার মেঘ দেখছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাইডের কথায়, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করে আসছি। কোনও দিন এমন ঘটনা ঘটেনি। গাড়িচালকরাও আমাদের উপর ভরসা করেন। কিন্তু এই ঘটনার পর থেকে গাইডদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আমাদের রুটি-রুজির প্রশ্ন জড়িয়ে এই কাজের সঙ্গে।” পুলিশ এই ঘটনায় আখতার, কালো এবং বাবুকে গ্রেফতার করেছে। আখতার গাইডের কাজ করতেন। জেরায় এই তিন জন খুনের কথা স্বীকার করলেও দু’জনের দেহ খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। দু’দিন কেটে গেলেও ডানকুনির পচা খাল থেকে দেহ উদ্ধার হয়নি ব্যবসায়ী শামিম এবং গাড়িচালক বরুণের।
এই ঘটনা গাইডদের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্বাস করে কোনও গাড়িচালক আর তাঁদের সঙ্গে নিতে চাইছেন না। গাইডদের দাবি, তাঁদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করা হোক। কারা গাইড, কত জন গাইড আছেন সেই তথ্য পুলিশের কাছেও থাকা দরকার। অতিমারি আর লকডাউনের কারণে অনেকেই এই পেশায় এসেছেন। শুধু হুগলি নয় অন্যান্য জেলা থেকেও এসে অনেকে গাইডের কাজ করছেন। তাঁদের অনেককেই চেনেন না বলে দাবি পুরনো গাইডদের। ট্রাক মালিক সংগঠনের সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ডানকুনি রাজ্যের মধ্যে অন্যতম ট্রান্সপোর্ট কেন্দ্র। ভিন্রাজ্য থেকে যে গাড়িগুলি আসে তার চালকরা শহরের রাস্তা ঠিক মতো চেনেন না। তাই গাইডের প্রয়োজন হয়। কে গাইড, কে দুষ্কৃতী সেটা জানার কোনও উপায় তাদের নেই। গাইডদের পরিচয়পত্র থাকলে সেটা দেখে বোঝা যাবে যে তিনি প্রকৃত গাইড কি না। তাই গাইডদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।”