দেড় মাসের নাতনিকে পা দিয়ে পিষে ‘খুন’ দাদুর!

শিশুটির দেহ কাঁসাই নদীর ধারে পুঁতেও ফেলা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি থেকে তুলে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৮
Share:

গ্রেফতারের পরে দীপক বেহেরা। নিজস্ব চিত্র।

মাস দেড়েকের মেয়েকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন বাবা-মা। রাতে ঘরে ঢুকেছিলেন শিশুটির ঠাকুরদা। পরদিন সকালে বাবা-মা দেখেন, কচি শরীরটায় আর সাড় নেই। অভিযোগ, পা দিয়ে পিষেই নাতনিকে খুন করেছে তার ঠাকুরদা। মেদিনীপুর শহরের পালবাড়ির এই ঘটনায় ওই মৃত শিশুকন্যার ঠাকুরদা দীপক বেহেরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে খুন এবং প্রমাণ লোপাটের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

Advertisement

শিশুটির দেহ কাঁসাই নদীর ধারে পুঁতেও ফেলা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি থেকে তুলে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তখন কেঁদেই চলেছেন শিশুটির দিদা সন্ধ্যা বাগ। তিনিই দীপকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সন্ধ্যার কথায়, ‘‘মেয়ের শ্বশুরই নাতনিকে পা দিয়ে পিষে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, শ্বাসরোধ হয়েই শিশুকন্যাটির মৃত্যু হয়েছে।

বছর দেড়েক আগে নিমতলাচকের বেহেরাপাড়ার বাসিন্দা বিনোদ বেহেরার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কর্নেলগোলা বাবুর্চিপাড়ার সোমা বাগের। মাস দেড়েক আগে সোমা ফুটফুটে এই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তাকে কেউ ডাকতেন ‘মেঘনা’ বলে আবার কেউ ডাকতেন ‘তিন্নি’।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাতের জলসায় শরীরী ঝিলিক, উঠছে আপত্তি

শিশুটির বাবা বিনোদ পেশায় রং মিস্ত্রি হলেও নিয়মিত কাজ পেতেন না। আর দীপক কাজ করতেন এক চায়ের দোকানে। রোজকার মতোই বুধবার রাতে মেঝেতে মাদুর পেতে মেয়েকে পাশে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন বিনোদ-সোমা। অভিযোগ, তখনই মদের বোতল নিতে মদ্যপ অবস্থায় ঘরে ঢোকে দীপক। সোমারা তখন ঘুমে কাদা। তাঁর কথায়, ‘‘শ্বশুর এসেছিলেন বুঝতে পেরেছিলাম। খানিক পরে ঘর থেকে চলেও যান। তখন আর ঘুম চোখে উঠিনি।’’

বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটি সাড়া দিচ্ছে না দেখে পরিজনেরা প্রথমে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যায় তাকে। শিশুটিকে দেখে চিকিৎসকেরা জানান, সে আগেই মারা গিয়েছে। এর পরেই কাঁসাই নদীর ধারে পুঁতে দেওয়া হয় শিশুটির দেহ।

কিন্তু কেন নাতনিকে খুন করল দীপক? সোমা বলছিলেন, ‘‘আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নিষ্ঠুর। বাচ্চা মেয়েটাকে পুজোয় একটা জামাও দেয়নি ওরা।’’ তবে কি ছেলের কন্যাসন্তান হয়েছে বলে মেনে নিতে পারেনি দীপক? মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মনের গভীরে কোনও ঘৃণা রয়েছে। তা এমনিতে প্রকাশ না পেলেও নেশার ঘোরে সামনে চলে আসে।’’

আরও পড়ুন: নবান্নের ভিআইপি গেটের সামনে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা

তবে খুনের অভিযোগ মানতে নারাজ দীপকের স্ত্রী রীতা। তাঁর যেমন বক্তব্য, ‘‘আমার স্বামী কেন নাতনিকে খুন করতে যাবে! আমার তো মনে হয়, ঘুমের মধ্যে বৌমাই নাতনির উপর পা তুলে দিয়েছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement