পয়লা বৈশাখের বার্তাতেও ডিএ-র দাবি। নিজস্ব চিত্র।
পয়লা বৈশাখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানালেন মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। খোলা চিঠির মাধ্যমে তাঁরা ওই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁরা ছুড়ে দিয়েছেন কটাক্ষও।
শনিবার বিকেলে ওই খোলা চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ওই চিঠির উপরে বড় বড় হরফে লেখা, ‘সরকারি কর্মচারীদের হালখাতা’। সঙ্গে তাঁদের শহিদ মিনারের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীকে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই মঞ্চে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁদের ডিএ-র দাবি মিটিয়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়নি। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে লেখা চিঠির শুরুতেই প্রীতি, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। তার পর লেখা হয়েছে, ‘‘আজ এই পুণ্যলগ্নে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ও সরকার পোষিত কর্মচারীদের বিগত ১২ বছর ধরে যে মহার্ঘ ভাতা বকেয়া আছে এবং শূন্যপদে নিয়োগ বকেয়া আছে, স্বচ্ছ ও স্থায়ী ভাবে নিয়োগের মাধ্যমে তা আমাদের বর্তমান বাসভবন শহিদ মিনারে এসে মিটিয়ে দিতে অনুরোধ করছি।’’
চলতি সপ্তাহেই ডিএ আন্দোলনকারীদের শহিদ মিনার চত্বর থেকে সরানোর দাবি তুলেছে সেনাবাহিনী। এই মর্মে আদালতে মামলা রুজু করেছে তারা। আগামী সপ্তাহেই সেই মামলার শুনানি হতে পারে। তাতেও ভ্রুক্ষেপ নেই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। বরং শহিদ মিনারকেই নিজেদের বর্তমান বাসস্থান বলেই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। খোলা চিঠির মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে নিজেদের দাবির পক্ষে নববর্ষের দিনটিকেও কাজে লাগাতে চেয়েছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
গত সপ্তাহের ১০-১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না কর্মসূচি পালন করে এসেছেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের প্রায় ৫০০ জন সদস্য। রাজধানীতে তাঁদের ওই ধর্না কর্মসূচিকে ভাল চোখে দেখেনি রাজ্য সরকার। কারণ আন্দোলনকারীরা নিজেদের দাবি আদায়ে ধর্নার পাশাপাশি উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ডিএ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ১৭ এপ্রিল রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের উপস্থিতিতে আলোচনায় বসবেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের তিন সদস্য। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ১৭ এপ্রিল কর্মচারী সংগঠনের তিন সদস্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে রাজ্যকে। সেই আলোচনার আগেই রাজধানীতে গিয়ে ডিএ-র দাবিতে সরব হয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
যদিও, ১৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় বাজেট বক্তৃতায় ৩ শতাংশ ডিএ-র ঘোষণা করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো একটি চিরকুট পড়ে বাজেট বক্তৃতার একেবারে শেষে ওই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ১ মার্চ নবান্ন থেকে বি়জ্ঞপ্তি জারি করে ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য। কিন্তু তাতেও কেন্দ্রীয় হারে ডিএর দাবিতে সরব থেকেছে সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। কখনও কর্মবিরতি, কখনও প্রশাসনিক ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন তারা।