ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে কর্মরত আইএএস এবং আইপিএস অফিসারদের এ বার রাজনৈতিক ভাবে নিরপেক্ষ থাকার ‘দায়বদ্ধতা’র কথা মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিধি মেনে না চলার প্রতিটি ঘটনার দায় তাঁদের ঘাড়েই বর্তাবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। শাসক দলের নেতৃত্ব অবশ্য রাজ্যপালের এমন হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের মতে, রাজ্যে আইএএস এবং আইপিএস-রা তাঁদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন। রাজ্যপালের এত ‘বিচলিত’ না হলেও চলবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে শনিবার টুইটে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্থ আইএএস-আইপিএস’রা অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস (কন্ডাক্ট) রুলস মেনে চলুন। ওই বিধি অনুযায়ী আপনাদের রাজনৈতিক ভাবে নিরপেক্ষ, দায়িত্বশীল এবং স্বচ্ছ হতে হবে। সংবিধানের সর্বোচ্চ মর্যাদা রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মেনে চলতে আপনারা বাধ্য।’’ ওই বিধি মোতাবেক আমলা ও পুলিশ-কর্তারা শুধু আইনি নির্দেশ পালনে দায়বব্ধ বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্যপাল হিসেবে এই বিধির বারংবার লঙ্ঘন দেখে আমি উদ্বিগ্ন। একটি কথাই মাথায় রাখবেন, এমন প্রতিটি ঘটনার দায় আপনাদের ঘাড়ে বর্তাবে।’’
নির্দিষ্ট কোনও ঘটনার প্রসঙ্গ এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করেননি রাজ্যপাল। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি আমলা ও পুলিশের ‘নিরপেক্ষতা’র প্রশ্ন নিয়ে সরব। যাঁদের আচরণে পক্ষপাতের অভিযোগ আছে, তাঁদের ভবিষ্যতে নির্বাচনের দায়িত্বে রাখা যাবে না বলেও আগে মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজভবন সূত্রের খবর, সম্প্রতি তাদের জনপ্রতিনিধিদের উপরে শাসক দলের হামলা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে লাগাতার অভিযোগ করেছে বিজেপি। দলীয় সাংসদ অর্জুন সিংহের গাড়ি ঘিরে হালিশহর ও ব্যারাকপুরের ঘটনায় সেই অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। কিছু অভিযোগ অন্য বিরোধীরাও করেছে। তার প্রেক্ষিতেই রাজ্যপাল এ দিনের মন্তব্য করে থাকতে পারেন।
তৃণমূল অবশ্য রাজ্যপালের এই বার্তাকে আমল দিতে নারাজ, দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াও জানানো হয়নি। তবে শাসক দলের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, ‘‘এই রাজ্যপাল সব সময়ই দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। এ রাজ্যে আইএএস-আইপিএস’রা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এবং দক্ষ। রাজ্যপালের এত উদ্বিগ্ন, বিচলিত না হলেও চলবে!’’
পাশাপাশিই বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল যা বলেছেন, তাতে নীতিগত ভাবে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাজ্যপালকে যারা নিয়োগ করেছে, সেই কেন্দ্রীয় সরকার কি আইনের শাসন মানছে? রাজ্যও একই পথে চলছে। বিধি, আইন সব কেতাবে আছে কিন্তু কথা শুনছে কে?’’