রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে এই মর্মে দাবি জানিয়ে এসেছিল তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। রাজ্যের শাসকদলের তরফে জানানো হয়েছিল, চোপড়ায় যাওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের পাঁচ দিন পর, মঙ্গলবার চোপড়ায় যাচ্ছেন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, সোমবার রাতেই দার্জিলিং মেলে চেপে কিষাণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। মঙ্গলবার সড়কপথে সেখান থেকেই পৌঁছবেন চোপড়ায়।
প্রসঙ্গত, চোপড়ার চেতনাগাছে বিএসএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গত সোমবার মাটি চাপা পড়ে চার শিশুর মৃত্যু হয়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দাসপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চেতনাগাছ এলাকায় বিএসএফ একটি নর্দমা কাটছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। সেখানেই খেলা করছিল শিশুরা। আচমকাই ধস নেমে দুর্ঘটনা ঘটে। মাটির নীচে চাপা পড়ে চার শিশু। বিএসএফ জওয়ানেরা তাঁদের উদ্ধার করে চোপড়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেখানেই চার শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এ নিয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে তৃণমূল। বিএসএফের তরফে অবশ্য বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, তারা কোনও খননকার্য চালায়নি।
গত বৃহস্পতিবার চোপড়ার শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে রাজভবনে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসু এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ ন’জন প্রতিনিধি। সাক্ষাৎ শেষে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল জানায়, রাজ্যপালকে তাঁরা চোপড়ায় যাওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁদের সেই আর্জির প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি চোপড়ায় যাবেন। শুধু তাই-ই নয়, এই ঘটনা নিয়ে তাঁর কাছে দেওয়া তৃণমূলের স্মারকলিপি অনুযায়ী যা যা করণীয়, তাই করবেন।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিহত শিশুদের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিধানসভায় রাজ্য বাজেটের উপর জবাবি বক্তৃতা দিতে গিয়েও চোপড়ার প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখানে তো ৩৩৪টি কেন্দ্রীয় টিম এসেছে। চোপড়ায় কেন যাচ্ছে না? শিশুদের কি কোনও দাম নেই?’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘‘ওই বিএসএফের শাস্তি চাই। ওরা গেরুয়া রঙের প্যাকেটে মানুষকে জিনিস দিচ্ছে। পুরোপুরি বিজেপির ক্যাম্প করছে বিএসএফ।’’ রবিবার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে চোপড়ায় যাওয়ার নির্দেশ দেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, সোমবারই চোপড়ায় যাচ্ছেন চন্দ্রিমা। তাঁর সঙ্গে থাকবেন তৃণমূলের জেলা এবং স্থানীয় নেতৃত্ব।