CV Ananda Bose

বিদেশ সফর কেমন হল? জানতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের, সঙ্গে কি অন্য কোনও বার্তাও?

চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে কিছু জানা না গেলেও রাজভবন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশ সফর বিষয়ে খোঁজখবর নিতেই চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৭
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

বিদেশ সফর কেমন হয়েছে, জানতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার রাতে ১২ দিনের স্পেন এবং দুবাই সফর সেরে কলকাতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিনই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে বিদেশ সফর বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দেন সাংবিধানিক প্রধান। চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে কিছু জানা না গেলেও রাজভবন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফর বিষয়ে খোঁজখবর নিতেই চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নবান্ন-রাজভবন টানাপড়েনের আবহে এই চিঠিকে রাজ্যপালের তরফে ‘সৌহার্দ্যের বার্তা’ বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

Advertisement

সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট), কলকাতা, কল্যাণী, বর্ধমান, কাজী নজরুল, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল, যিনি পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও বটে। ওই উপাচার্যদের বেতন বন্ধ করে দেয় শিক্ষা দফতর। রাজ্যের তরফে যুক্তি দেওয়া হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না আচার্য। উপাচার্য নিয়োগে আচার্য তথা রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। এই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্য, রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)— তিন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিই স্থায়ী উপাচার্যদের নাম সুপারিশ করবে। শুধু উপাচার্য নিয়োগ নিয়েই নয়, ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়েও রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। বহু বার প্রকাশ্যেই রাজ্যপালের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

তবে এই সংঘাতপূর্ণ আবহেও সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের প্রতি ‘সদর্থক বার্তা’ দেওয়ার চেষ্টা করেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরের আগে রাজ্যপাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিদেশে যাচ্ছেন, আমি চাই না এমন সময় তাঁর ওপর কোনও চাপ দেওয়া হোক। যখন তিনি বিদেশ সফরে থাকবেন, সেই সময় তাঁর ওপর কোনও অতিরিক্ত ভার যেন না দেওয়া হয়।” তার আগে অবশ্য মধ্যপাতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দু’টি ‘গোপন’ চিঠি পাঠান রাজ্যপাল। চিঠির বিষয়টি স্বীকার করে নিলেও, তার বিষয়বস্তু সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী কিংবা রাজ্যপাল কেউই মুখ খোলেননি।

Advertisement

গত শুক্রবারই রাজ্যপাল বলেন, “রাজভবনের অরাজনৈতিক থাকা উচিত এবং রাজভবন সেটাই থাকবে।” রহস্যময় জোড়া চিঠি (মিস্ট্রি চিঠি)-কে ‘হিস্ট্রি’ বা ইতিহাস বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই ঘটনা পরম্পরায় রাজ্যপালের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি, নবান্ন-রাজভবন দূরত্ব কমিয়ে আনার ইঙ্গিত কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সামনেই উৎসবের মরসুম। এই সময় একাধিক অনুষ্ঠানে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হতে পারে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর। রেড রোডের দুর্গাপুজো কার্নিভ্যালে রাজ্যের তরফে প্রতি বছরই আমন্ত্রণ জানানো হয় রাজ্যপালকে। এই বছরও তার অন্যথা হবে না বলে জানা গিয়েছে। একটি সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত যাতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সূত্রপাত না হয়, সে কারণেই আপাতত সংঘাতে ইতি টানতে চাইছে রাজভবন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরের খোঁজ নেওয়ার নেপথ্যে আসলে অন্য বার্তাও লুকিয়ে রয়েছে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement