(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সোমবার ফের এক বার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তা নিয়ে পাল্টা রাজ্যপালের উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল মানসিক অশান্তিতে রয়েছেন। তাই তাঁর হতাশা বেরিয়ে পড়ছে।’’
কেন মানসিক অশান্তি অশান্তি রাজ্যপালের? বিশদে তা-ও জানিয়েছেন কুণাল। তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যাঁকে অপমান করে তাড়িয়েছিলেন, সেই বাঙালি মহিলা আমলাই এখন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে স্বরাষ্ট্রসচিব পদে নিয়োগ করেছেন। তাঁকে ডেকেই এখন রাজ্যপালকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে। তাই তাঁর মানসিক অশান্তি হওয়া স্বাভাবিক।’’ উল্লেখ্য, সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ইডি আধিকারিকদের মারধরের ঘটনায় রাজ্যপাল তলব করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিক ও স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে।
আগে নন্দিনী ছিলেন রাজ্যপালের প্রধান সচিব। গত বছর সরস্বতীপুজোর বিকেলে যখন রাজ্যপালের বাংলায় হাতেখ়ড়ি হয়েছিল, তখন ওই পদে ছিলেন নন্দিনী। তার কয়েক মাস পরেই রাজ্যপালের সঙ্গে নন্দিনীর ‘আস্থা’র সম্পর্কে বোধহয় চিড় ধরে। নন্দিনীকে তাঁর প্রধান সচিব পদ থেকে ‘রিলিজ’ করে দেন বোস। সেই নন্দিনীই এখন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। রাজনৈতিক মহল তো বটেই, আমলা মহলেরও অনেকে নন্দিনীর নিয়োগে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। সোমবার সেই প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করলেন কুণাল।
সন্দেশখালিকাণ্ডে সোমবার বিকেল পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানি। কিন্তু মূল অভিযুক্ত (তৃণমূল নেতা শাহজাহান) এখনও অধরা। তাই আমি অসন্তোষ প্রকাশ করছি।’’
প্রসঙ্গত, মাঝে বেশ কিছু দিন রাজ্যপাল সম্পর্কে তেমন কোনও তির্যক মন্তব্য করেননি কুণাল। পুজোর আগে রাজভবনে গিয়ে বোসের হাতে শারদ উপহার তুলে দিয়ে এসেছিলেন। তার আগে ওনাম উপলক্ষে কুণালকে উপহার পাঠিয়েছিলেন বোস। আবার দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন দেখা গিয়েছিল কুণালের পাড়ার পুজোয় গিয়ে রাজ্যপাল পুষ্পঞ্জলি দিচ্ছেন। তৃণমূলের অনেক নেতাই এর মাঝে নানা বিষয়ে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন। কিন্তু কুণাল যেন একটু সরেই ছিলেন। মকর সংক্রান্তিতে ফের সেই আক্রমণের পথে হাঁটলেন তৃণমূলের মুখপাত্র।