CV Ananda Bose

উপাচার্য করতে রাজ্যের দশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দশ জন শিক্ষককে ডেকে বৈঠক রাজ্যপালের, ফের বিতর্ক

রাজ্যপাল এর আগে দু’-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে এক-এক জনকে অস্থায়ী উপাচার্যের পদে বসানোয় রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ তীব্র হয়ে উঠেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৩ ০৬:৫২
Share:

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ফাইল চিত্র।

বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি নিয়ে গড়া সার্চ বা সন্ধান কমিটি কয়েকটি নামের তালিকা দেবে এবং আচার্যের অনুমোদনক্রমে সেই তালিকা থেকে বেছে নেওয়া হবে উপাচার্য। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের এই প্রচলিত পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে কি না, রাজ্যপাল-আচার্য সি ভি আনন্দ বোসের এক পদক্ষেপ ঘিরে সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে। বুধবার রাজ্যের দশটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দশ জনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বোস। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, দশ জনের কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিতে তাঁরা প্রস্তুত কি না।

Advertisement

রাজ্যপাল এর আগে দু’-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে এক-এক জনকে অস্থায়ী উপাচার্যের পদে বসানোয় রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ তীব্র হয়ে উঠেছিল। রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যদের কার্যকাল যখন একে একে শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেই সময়ে উপাচার্য নিয়োগে বোসের এই তৎপরতা নতুন বিতর্ক উস্কে দিয়েছে শিক্ষা ও রাজনৈতিক শিবিরে।

বোস এ দিন যে-দশ জনকে ডেকেছিলেন, সেই দলে পদত্যাগী উপাচার্যদের মধ্যে ছিলেন শুধু বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়াও ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যের ডিন অমলেন্দু ভুঁইয়া, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এক জন করে শিক্ষককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল গৌড়বঙ্গ, সিধো-কানহো-বীরসা, বাঁকুড়া, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। নির্দিষ্ট কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ না-করেই তাঁদের সকলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, উপাচার্যের দায়িত্ব নিতে তাঁরা প্রস্তুত কি না। তবে এ দিন কাউকেই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

Advertisement

এ দিন তিন মাসের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুরঞ্জন দাস, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবকুমার মুখোপাধ্যায়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ছেত্রী, বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সুরঞ্জন এ বার রাজ্যের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিচ্ছেন।

এ দিকে, উপাচার্য না-থাকায় তীব্র সমস্যা চলছে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’মাস ধরে উপাচার্য নেই, পরীক্ষা নিয়ামক নেই। আটকে আছে কর্মীদের বেতন। পরীক্ষার ফলও ঘোষণা করা যায়নি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ ও ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসারের মেয়াদ বৃদ্ধির পরে সমস্যা অনেকটা কমেছে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনান্স অফিসার ও রেজিস্ট্রার চেকে সই করেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, উপাচার্য না-থাকলেও বেতন হবে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য না-থাকলেও বেতনের ক্ষেত্রে সই করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রেজিস্ট্রারকে। আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়েও বেতন নিয়ে সমস্যা নেই। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও পদ থেকে সরেননি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এ দিন তাঁর সময়সীমা এমনিতেই শেষ হয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement