CV Anand Bose

বাংলার রাজ্যপাল হুঙ্কারও দিলেন বাংলায়, ‘আমি শেষ পর্যন্ত এই লড়াই লড়ব!’ শিক্ষা দফতরকে চ্যালেঞ্জ

দু’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দরকারে তিনি রাজভবনের সামনে ধর্না দেবেন। যার জবাবে রাজ্যপাল সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৯
Share:

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

গত সরস্বতী পুজোর দিন তাঁর বাংলা ভাষা শেখার হাতেখড়ি হয়েছিল। সেই আলো ঝলমলে অনুষ্ঠান নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে কম আলোচনা হয়নি। রাজভবনের অন্দরে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সবেমাত্র সাত মাস কেটেছে। এর মধ্যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শুধু যে বাংলা বলছেন তা-ই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর যে সংঘাত বেধেছে, তাতে এ বার বাংলা ভাষাতেই হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দের নামে শপথ নিয়ে রাজ্যপাল বোস বাংলায় বললেন, ‘‘আমি শেষ পর্যন্ত এই লড়াই লড়ব!’’

Advertisement

তিনি যাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য (ভাইস চ্যান্সেলর বা ভিসি) হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন ইস্তফা দিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার বাংলায় জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর এ-ও অভিযোগ, ‘‘ইস্তফা দেওয়া ভিসিদের কেউ কেউ আমায় বলেছেন, টেলিফোনে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এক জন সিনিয়র আইপিএস অফিসার এটা করিয়েছেন। চাপের মুখে পাঁচ জন ভিসি ইস্তফা দিয়েছেন। কেন? কেন? কেন?’’

রাজভবন এবং বিকাশ ভবনের টানাপড়েন ঘিরে রাজ্যের উচ্চশিক্ষায় কার্যত নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দরকারে তিনি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করবেন। মমতা বলেছিলেন, ‘‘যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওঁর (রাজ্যপাল) কথা শুনে চলবেন, তাঁদের জন্য আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। আমি দেখি, কী করে আপনি মাইনে দেন!’’ যে বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা এমনও বলেছিলেন যে, দরকারে তিনি নিজে রাজভবনের সামনে ধর্না দেবেন!

Advertisement

যার জবাবে রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরকে। বোস আরও বলেছেন, ‘‘রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর যাঁদের ভিসি হিসাবে নিয়োগ করেছিল, তাঁদের আমি সরিয়ে দিয়েছি। ওই নিয়োগকে হাই কোর্ট বলেছে ভুল। আমায় ঠিক বলেছে। যাঁদের রাজ্য সরকার ভিসি হিসাবে নিয়োগ করেছিল, তাঁদের কেউ দুর্নীতিগ্রস্ত, কেউ ছাত্রীকে হেনস্থা করেছেন, কেউ দলের লোক। আমি তাঁদের সরিয়ে দিয়েছি।’’

রাজ্যপালের আরও দাবি, তিনি আচার্য হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ‘হিংসা ও দুর্নীতি’ থেকে মুক্ত করতে চান। কিন্তু উচ্চশিক্ষা দফতর তাতে বাধা দিচ্ছে। রাজ্যপালকে নিশানা করতে গিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপাল তথা পদাধিকার বলে রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের উদ্দেশে ‘জেমস বন্ড’, ‘গোপালভাঁড়’, ‘বিদূষক’ ইত্যাদি বিশেষণ ব্যবহার করেছিলেন। তারপরে মমতা বলেছিলেন, ‘‘ব্রাত্য অনেক ভাষা জানে। আমি সে সব বলছি না। ভাষা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে।’’ বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন সরকারের দিকে। মালয়ালি উচ্চারণে। কাটা-কাটা বাংলায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement